‘দিঘাশ্রী’ ভবন। নিজস্ব চিত্র।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে ‘বেঙ্গল বিজনেস সামিট’ হয়েছিল। তারপর এক বছর পূর্ণ হল। গত ডিসেম্বরের ওই অনুষ্ঠানের পর থেকে কার্যচত ফাঁকাই পড়ে রয়েছে সৈকত শহরে কনভেনশন সেন্টার ‘দিঘাশ্রী’। সরকারি অর্থে নির্মিত এই কনভেনশন সেন্টারের বাস্তবতা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
একাধারে অডিটোরিয়াম, সেমিনার হল, স্পা, ব্যাঙ্কোয়েট—কনভেনশন সেন্টারের সব কিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া। মুখ্যমন্ত্রী নামকরণ করেছিলেন ‘দিঘাশ্রী’। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে কনভেনশন সেন্টার গড়ে তুলেছিল রাজ্য সরকার তার ছিটেফোঁটাও কার্যত পূরণ হয়নি। ফলে সরকারি টাকায় তৈরি কনভেনশন সেন্টারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
গত ২০১৭ সালের ১১ জুলাই নিউদিঘায় একটি আধুনিক কনভেনশন সেন্টার গড়ে তোলার জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জমির উপরে এই কনভেনশন সেন্টারে ৩০০ আসন বিশিষ্ট সেমিনার হল, ১০০০ আসনের অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম, ব্যাঙ্কোয়েট হল, স্পা, জিম সেন্টার কী নেই! আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী, ব্যবসা এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনার উদ্দেশ্যে এই কনভেনশন সেন্টার গড়ে ওঠে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে এখানে রাজ্যের শিল্প সম্মেলন হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে সেখানে কোনও সংস্থার সেমিনার কিংবা সম্মেলন কিছুই হয়নি বলে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও ওই সংস্থার ডিজি সুপ্রিয় মাইতির দাবি, ‘‘বেঙ্গল বিজনেস সামিট ছাড়াও ওই কনভেনশন সেন্টারে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ একাধিকবার প্রশাসনিক সভা করেছে। হোটেল মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ওখানে সভা হয়েছে। তবে আপাতত করোনা পরিস্থিতির জন্য ওখানে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না।’’
যদিও গত মার্চ মাস থেকে করোনার জেরে দীর্ঘ আট মাস সবকিছুই বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কনভেনশন সেন্টার পুরোদমে চালুর ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে বলেই জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভূ গোয়েল বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হলে কনভেনশন সেন্টারে সভা-সমিতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’’
কনভেনশন সেন্টার নিয়ে শাসক দলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধুমাত্র শাসক দলের নেতাদের পকেটে কাটমানি ঢোকানোর জন্যই কনভেনশন সেন্টার গড়ে তুলেছে রাজ্য সরকার।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘সরকারি অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে। কনভেনশন সেন্টারের কোনও সারবত্তা নেই সেখানে।’’