নির্মলা সীতারামন ও অমিত মিত্র ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার জিএসটি পরিষদকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে স্বৈরতান্ত্রিক, সর্বশক্তিমান মনোভাব নিয়ে চালাতে চাইছে বলে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অভিযোগ তোলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা আক্রমণে গেলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অমিতকে পাল্টা নিশানা করে নির্মলার অভিযোগ, এ সব কথা রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে খাটে। নির্মলা বলেন, “উনি স্বৈরতন্ত্রী, সর্বশক্তিমান, সর্বব্যাপী— এ সব বলছেন, বাংলার শাসক দলের নেতৃত্বই আসলে তা-ই। রাজ্যে বিরোধীদের শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। রাজনৈতিক হিংসার খবর, সুপ্রিম কোর্টে ধর্ষণের মামলায় কেঁপে উঠতে হয়।” নির্মলার পাল্টা দাবি, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় জিএসটি পরিষদে অনেক বেশি গণতন্ত্র রয়েছে।
গত শনিবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী-সহ বিরোধী অর্থমন্ত্রীরা কোভিডের টিকা-ওষুধ-চিকিৎসার সরঞ্জামে জিএসটি-র হার শূন্যে নামিয়ে আনার দাবি তুললেও, কেন্দ্র রাজি হয়নি। আপত্তি জানাতে গেলে তাঁকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি, ভিডিয়ো কনফারেন্সে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে অমিত মিত্রর অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কেন্দ্রকে রাজ্যের কণ্ঠরোধ করার জন্য দুষেছিলেন। নির্মলার পাল্টা দাবি, সে সময় অমিতের কথা শোনা যায়নি।
নির্মলা আজ বলেন, “রাজ্য সরকারের উচিত, অর্থমন্ত্রীর জন্য ভাল ইন্টারনেট সংযোগের বন্দোবস্ত করা। উনি বৈঠক থেকে বার বার বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। আমি ওঁকে সম্মান করি। ওঁর বক্তব্য পুরোপুরি শুনতে চাই।” কিন্তু অমিতের অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক দোষারোপ’ বলে তকমা দিয়ে নির্মলার বক্তব্য, “উনি দেশকে বিভ্রান্ত করছেন। উনি বলছেন, রাজ্য না কি নিজের কর বসানোর ৭০ শতাংশ ক্ষমতা জিএসটি-তে কেন্দ্রের হাতে তুলে দিয়েছে। রাজ্যের রাজস্ব আয়ের মাত্র ৪৭% জিএসটি-তে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।”
অমিতের অভিযোগ ছিল, জিএসটি পরিষদে আর ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে না। নির্মলা বলেন, এই অভিযোগ অবিশ্বাস্য। তাঁর দাবি, কোভিড পণ্যে জিএসটি বসানো নিয়ে জিএসটি পরিষদের মন্ত্রিগোষ্ঠীর মতকে অমিতবাবু উড়িয়ে দিতে পারেন না। মন্ত্রিগোষ্ঠীর সুপারিশের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। জিএসটি রূপায়ণ কমিটিতে বাংলার অফিসাররা রয়েছেন। বাংলার সুপারিশেই রাজ্য সরকার, পুরসভাকে ই-ইনভয়েসিং থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে বাংলার কথা শোনা হচ্ছে না, এই অভিযোগ খাটে না।