এসএসকেএমে কুকুরের ডায়ালিসিস-কাণ্ডে সতর্কিত নির্মল-সহ তিন জন

সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের ‘কীর্তি’ নিয়ে এমসিআইয়ের নীতি নির্ধারক কমিটির দ্বারস্থ হয়েছিলেন চিকিৎসক কুণাল সাহা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:১২
Share:

অলঙ্করণ: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।

সাড়ে চার বছর পরে এসএসকেএমে কুকুর ডায়ালিসিস-কাণ্ডে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র (এমসিআই) বোর্ড অব গভর্নর্স। তবে অভিযুক্ত তিন চিকিৎসককে সতর্ক করার পাশাপাশি পরিকল্পনা ও পরিকল্পনা রূপায়ণের ফারাকের মধ্যেই নির্দেশকে বেঁধে রাখল এমসিআইয়ের বোর্ড অব গভর্নর্স।

Advertisement

২০১৫ সালের জুনে এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগে ‘প্রভাবশালী’ কুকুরের ডায়ালিসিসের অনুমতি-বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা তথা মন্ত্রী নির্মল মাজির।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতির এক আত্মীয়ের কুকুরের জন্য হাসপাতালের ডায়ালিসিস ওয়ার্ডে সব ব্যবস্থা পাকা হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। হাসপাতালের তৎকালীন অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র অনুমতি দিয়েছিলেন। বিভাগীয় প্রধান রাজেন্দ্র পাণ্ডে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নির্দেশ দিতে দ্বিধা করেননি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ডায়ালিসিস ওয়ার্ডের ভিজিটিং চিকিৎসকের নোটে অঘটন আটকানো গিয়েছিল।

Advertisement

সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের ‘কীর্তি’ নিয়ে এমসিআইয়ের নীতি নির্ধারক কমিটির দ্বারস্থ হয়েছিলেন চিকিৎসক কুণাল সাহা। তিনি জানিয়েছেন, সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এমসিআই নির্দেশে দিয়েছে, এসএসকেএমের ডায়ালিসিস যন্ত্রে কুকুরের ডায়ালিসিসের পরিকল্পনা যে হয়েছিল তা প্রমাণিত। অভিযুক্ত তিন জন চিকিৎসকই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে পুরো বিষয়টি পরিকল্পনা স্তরেই রাখা সম্ভব হয়েছিল, বাস্তবায়িত হয়নি। চিকিৎসক নির্মল মাজি, রাজেন্দ্র পাণ্ডে এবং প্রদীপ মিত্রের ভূমিকার নিন্দা করে কমিটি জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে এমন না হয় সে বিষয়ে তিন জন যেন সতর্ক থাকেন।

শনিবার কুণাল বলেন, ‘‘তিন জনই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ কথা বলার পরেও অভিযুক্তেরা যে দৃষ্টান্তমূলক কোনও শাস্তি পেলেন না, তা দুর্ভাগ্যজনক।’’

এ দিন নির্মল বলেন, ‘‘এই নির্দেশের কোনও সারবত্তা নেই। নির্দেশ সংক্রান্ত কোনও চিঠি পাইনি।’’ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে আত্মপক্ষ সমর্থনে তার প্রতিলিপি তো পাব। এমসিআই থেকে তা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে আসার কথা। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছ থেকে এ ধরনের কোনও কাগজ পাইনি। নির্দেশ হিসাবে যা বলা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ হতে পারে, নির্দেশ নয়।’’

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছিল কি না, কাউন্সিল তা এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্যভবনের কাছে জানতে চেয়েছিল। দু’ক্ষেত্রেই জবাব এসেছিল এমন কোনও তথ্য নেই। বিষয়টি এমসিআই’কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’ শুক্রবার পর্যন্ত এমসিআইয়ের নির্দেশের প্রতিলিপি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরে আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।

সদ্য প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে কোনও চিঠি পাইনি। তাছাড়া এ ব্যাপারে কিছু জানা ছিল না। তখন কী থেকে কী ঘটেছিল সবাই জানে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement