গ্রামে লিউইয়ন আহমেদ। নিজস্ব চিত্র
ফেসকভারের আড়াল থাকায় পাড়াপড়শি তো বটেই, ছেলেকে চিনতে পারেননি মা মালা বেওয়াও। তবে জংলা পোশাকের বিএসএফ বেষ্টনী আর এনআইএ কর্মীদের ধমকে কিছু ক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারেন, দশ দিন আগে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া তাঁর ছেলে লিউইয়ন আহমেদকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ছেলের হাতটা একবার ধরতে চেয়ে এগিয়ে যেতেই গোয়েন্দারা তাঁকে সরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘ওর কাছে এখন যাওয়া যাবে না। তার চেয়ে ঘরের কোথায় কী কাগজপত্র রয়েছে বলুন তো।’’ চশমার পুরু কাচ মুছে মহিলা বলেন, ‘‘আমি আর কাগজপত্তরের কী বুঝি বাবা!’’
বাড়ির লোকের মতো জেলা পুলিশের কাছেও কোনও খবর ছিল না। মঙ্গলবার, দুপুর দু’টো নাগাদ আচমকা বিএসএফের ৬টি জিপ এসে দাঁড়ায় ডোমকল পুরাতন বিডিও মোড়ের ছোট্ট বাড়িটার কাছে। নিমেষে বিএসএফ জওয়ানেরা ঘিরে ফেলে এলাকা। গোটা পাড়ায় অ্যাসল্ট রাইফেল উঁচিয়ে টহলদারি শুরু করে বিএসএফ। জিপ থেকে লিউইয়নকে নামিয়ে প্রায় এক ধাক্কায় তাকে বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে নেন এনআইএ কর্মীরা। তার পর লিউইয়নের ছোট্ট ঘরটায় তাকে নিয়েই সকলে মিলে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। ফের শুরু হয় তল্লাশি। প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে তল্লাশির পরে যে ভাবে ঝড়ের গতিতে এসেছিলেন, ৬ গাড়ির কনভয় নিয়ে তাঁরা সে ভাবেই ধুলো উড়িয়ে বেরিয়ে যান জলঙ্গি বিএসএফ ক্যাম্পে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, লিউইয়নকে নিয়ে জলঙ্গির বেশ কয়েকটি গ্রামে মঙ্গলবার রাতে যেতে পারেন গোয়েন্দারা। রানিনগর, ডোমকল এলাকার যে
সব গ্রাম থেকে গত সপ্তাহে অন্য জঙ্গিদের ধরপাকড় করা হয়েছিল সেই সব গ্রামেও লিউইয়নকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।