রাজ্যে আল কায়দা জঙ্গি চক্রের খোঁজে নেমে ন’টি ‘সন্দেহজনক’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। — প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে আল কায়দা জঙ্গি চক্রের খোঁজে নেমে ন’টি ‘সন্দেহজনক’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, নিউ জলপাইগুড়ি থানা এলাকার ফুলবাড়ির একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ওই অ্যাকাউন্টগুলি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করে জঙ্গি গোষ্ঠীর টাকা পাচার করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, গুজরাতের আমদাবাদ থেকে ধৃত চার বাংলাদেশি আল কায়দা জঙ্গির সূত্রে সোমবার রাজ্যের তিন জায়গায় তল্লাশি করেছিল এনআইএ। সেই সূত্রেই ফুলবাড়ির পাশাপাশি কোচবিহারের হলদিবাড়ি এবং কলকাতার বেনিয়াপুকুরের ক্যান্টোফার লেনেও তল্লাশি হয়। কলকাতাতেও সন্দেহভাজনের খোঁজ পাননি গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, ওই ন’টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে আল কায়দা গোষ্ঠীর টাকা আমদাবাদের জঙ্গিদের কাছে গিয়েছিল। বাকি অ্যাকাউন্ট থেকে কী লেনদেন হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে। ফুলবাড়ির ওই বাসিন্দার বাড়ি থেকে একাধিক ভুয়ো প্যান কার্ড এবং আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। সেখানে কার্ড মালিকের নাম এক থাকলেও প্রতিটিতে বাবার নাম আলাদা। আবার আধার এবং প্যান কার্ডে নাম এক থাকলেও ঠিকানা আলাদা। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন এনআইএ-র অফিসারেরা। তাঁর কথায় বিস্তর অসঙ্গতি আছে বলে ওই সূত্রের দাবি। এনআইএ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি থানায় এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ২১ নভেম্বর তাঁকে গুজরাতের এনআইএ অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ওই ব্যক্তি গত এক বছর ধরে ফুলবাড়িতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। তিনি কোন পেশায় যুক্ত সে ব্যাপারেও সদুত্তর দিতে পারেননি।
গত বছর আমদাবাদের এটিএস চার জন বাংলাদেশি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল। পরে তদন্তভার নেয় এনআইএ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই পাঁচ জন বিভিন্ন পেশার আড়ালে আল কায়দার জন্য অর্থ জোগাড় করছিলেন। একই সঙ্গে নিচুতলায় সংগঠন বিস্তারের দায়িত্ব ছিল তাঁদের উপরে। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, চার জন বাংলাদেশি হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকেছিলেন। এ রাজ্যে ঢুকতে তাঁদের সাহায্য করেন হলদিবাড়ির এক বাসিন্দা। তাঁর খোঁজে তল্লাশি হলেও সন্ধান মেলেনি। এনআইএ-র অনুমান, ওই ব্যক্তিও বাংলাদেশি নাগরিক। নাম ভাঁড়িয়ে হলদিবাড়ির বাড়িতে থাকছিলেন তিনি। সেই বাড়ির ঠিকানায় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন।
এনআইএ জানিয়েছে, আল কায়দা জঙ্গি চক্রের শিকড় অন্য রাজ্যেও আছে। সোমবারই এ রাজ্যের সঙ্গে কাশ্মীর, কর্নাটক, বিহার, ত্রিপুরা এবং অসমের নানা জায়গায় তল্লাশি হয়।