এনআইএ-র দাবি, রাজধানী দিল্লি-সহ দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলার ছক কষেছিল ধৃত ১১ জন। —নিজস্ব চিত্র।
আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে মুর্শিদাবাদ এবং কেরল থেকে গ্রেফতার ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। শুক্রবার নয়াদিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালতে ওই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। এনআইএ-র দাবি, রাজধানী দিল্লি-সহ দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলার ছক কষেছিল ধৃতরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ। একই সঙ্গে কেরলের এর্নাকুলামেও অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে এর্নাকুলাম থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃতরা হলেন মুর্শিদ হাসান ওরফে সাদিক, মোশারফ হোসেন, মইনুল মণ্ডল, লিউ ইয়ান আহমেদ ওরফে লিওন, নাজমুস সাকিব, ইয়াকুব বিশ্বাস, সামিম আনসারি, আবু সুফিয়ান, আতিউর রহমান, আল মামুন কামাল এবং আব্দুল মোমিন মণ্ডল।
এনআইএ সূত্রে খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ১২১, ১২১এ এবং ১২২ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ১৬, ১৮, ১৮বি, ২০,৩৮ ধারা এবং বেআইনী ক্রিয়াকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ৪০ ধারা-সহ অস্ত্র আইনের ২৫ ধারাতেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
এনআইএ-র দাবি, আল কায়দার জেহাদি মন্ত্রে অনুপ্রাণিত ওই জঙ্গি সংগঠনের ভারতীয় শাখা ‘কায়দাতুল জিহাদ’ বা ‘আল কায়দা ইন সাবকন্টিনেন্ট’-এর সক্রিয় সদস্য এই ১১ জন।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের আরও দাবি, তদন্তের পর জানা গিয়েছে যে মুর্শিদের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাশকতার করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন ধৃতরা। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে আল কায়দার জঙ্গিদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মুর্শিদের। সেখান থেকে জেহাদি কার্যকলাপের নির্দেশ পেতেন তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা। নেটমাধ্যম ব্যবহার করে তা সাংকেতিক ভাবে ছড়ানোর ব্যবস্থাও করেছিলেন তাঁরা। এ দেশে আল কায়দার সংগঠনে নতুন সদস্য জোগাড়ের কাজেও জড়িত ছিলেন ধৃতরা। দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলার পাশাপাশি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যও ছিল তাঁদের। এমনকি, এ দেশে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি ব্লগারকে খুনেরও পরিকল্পনা ছিলেন তাঁরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ দেশে ট্রেনিং সেন্টার খোলারও পরিকল্পনা ছিল এই জঙ্গি সংগঠনের। কোনও ব্যক্তিকে বিশ্বাসঘাতক বলে চিহ্নিত করলে, তাঁকে খুনের চক্রান্ত করত জঙ্গিরা। সংগঠনের হয়ে অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক এবং অর্থ জোগাড়ের জন্য নিজেদের মধ্যে একাধিক বৈঠকও করেছেন তাঁরা। অত্যাধুনিক অস্ত্রের খোঁজে বিদেশি বসবাসকারী যোগানদারদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছিল জঙ্গিরা। গত বছর এনআইএ-এর হাতে গ্রেফতারির আগেই দিল্লিতে হামলার জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রও পাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। তবে এনআইএ অভিযানের ফলে শেষ মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।