গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভূপতিনগরে আধিকারিকদের উপরে ‘হামলা’ চালানোর ঘটনায় এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। মঙ্গলবারই দুপুর আড়াইটের সময় মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে ২০২২ সালের একটি বিস্ফোরণ মামলার তদন্ত করছে এনআইএ। তারই তদন্তে শনিবার ওই এলাকায় যায় এনআইএর কর্তারা। স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাড়িতে তোলার পরেই এনআইএর গাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়ে কয়েক জন গ্রামবাসী তাদের গাড়িতে হামলা করেন। তদন্তকারীদের গাড়ির কাচ ভাঙে। আহত হন এক আধিকারিক।
শনিবারই ভূপতিনগর থানায় হামলার লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এনআইএ। তবে সেই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তার মধ্যেই শনিবার রাতে ভূপতিনগর থানায় এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবার। এফআইআর দায়ের করে সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। এ নিয়েও রাজনৈতিক চাপানউতর চলছে।
রবিবার বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাটির তরফে বলা হয়, অনভিপ্রেত বিতর্ক চলছে। তার পরই তারা বলে, “মহামান্য কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২৩ সালের ৬ জুন একটি বিস্ফোরণ সংক্রান্ত মামলার তদন্তভার হাতে নেয় তারা। সেই মতোই শনিবার নারুয়াবিলা গ্রামে তল্লাশি চালাতে যাওয়া হয়।” কোনও অনৈতিক কাজ করা হয়নি বলেও বিবৃতিতে দাবি করে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
তাদের উপর হামলার প্রসঙ্গ পুনরুত্থাপন করে এনআইএ তাদের বিবৃতিতে জানায়, বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত দু’জনকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা ‘বিনা প্ররোচনায়’ তদন্তকারীদের উপরে হামলা চালায়। এক জন তদন্তকারী আহত হন এবং এনআইএর সরকারি গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়ম মেনেই তদন্ত চালানোর কথা বলে এনআইএ বিবৃতিতে জানায়, নিরপেক্ষ সাক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সঙ্গে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ান এবং মহিলা কনস্টেবলরা। নিয়ম মেনেই দুই তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানা এবং বলাইচরণ মাইতিকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় এনআইএ। যদিও শাসকদল এনআইএর যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের প্রশ্ন এনআইএ অভিযানের সময় নিয়ে। একই সঙ্গে তাদের অভিযোগ, এনআইএর এক কর্তার সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
ভোটের সময় চার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধানকে বদল করা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবিতে সোমবারের পর মঙ্গলবারও দিল্লিতে ধর্নায় বসেছে তৃণমূল। মন্দির মার্গ থানা চত্বরে ধর্নায় বসেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। তৃণমূলের ১০ জন সাংসদ এবং প্রাক্তন সাংসদদের সেই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্তা, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবীররঞ্জন বিশ্বাস।