শিখা মিত্রর বাড়িতে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। নিজস্ব চিত্র।
আগামী সপ্তাহেই ফের তৃণমূলে যোগ দিতে পারেনসোমেন-জায়া শিখা মিত্র। শুক্রবার রাতের এক বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। শুক্রবার রাতে শিখার বাড়িতে যান দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। সেখানেই শিখাকে দলে যোগদানের পাশাপাশি, তৃণমূলের বঙ্গজননী সংগঠনের বড় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন মালা। সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন শিখা।গত মঙ্গলবার সোমেনের মৃত্যু বাৎসরিকের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেছিলেন শিখাকে। মমতা ছাড়াও সেদিন ফোন করেছিলেন মালা ও চৌরঙ্গীর তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। তখন থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, শিখা তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহেই বঙ্গজননী সংগঠনের বড় কোনও পদে শিখার নাম ঘোষণা করা হবে। সোমেন-পুত্র রোহন বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতৃত্ব আন্তরিকভাবেই মাকে সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মা তাঁদের প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন।’’ তবে বঙ্গজননীর সাংগঠনিক পদের পাশাপাশি, সরকারি কোনও কমিটিতেও শিখাকে জায়গা দেওয়া হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। তাঁর মা যোগ দিলেও, তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন রোহন মিত্র। ফের তৃণমূলে যোগ দিলে তা হবে তৃণমূলে শিখার দ্বিতীয় ইনিংস। কারণ, ২০০৮ সালে স্বামী সোমেনের সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে সোমনের ছেড়ে যাওয়া অধুনা লুপ্ত বিধানসভা শিয়ালদহ থেকে উপনির্বাচনেও জিতেছিলেন তৃণমূলের হয়ে।
২০১১ সালে আসন পুনর্বিন্যাস কার্যকর হওয়ার পর চৌরঙ্গী থেকে দাঁড়িয়ে ফের তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন শিখা। কিন্তু ২০১৩ সালের ১ জুলাই বিধান ভবনে বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে চৌরঙ্গীর তৎকালীন বিধায়ক শিখা ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম নিয়ে। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তৃণমূল ছেড়ে সস্ত্রীক কংগ্রেসে ফিরে আসনে সোমেন। তাঁর আগেই নিজের তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন শিখা। সেই সময় থেকেই তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না মিত্র পরিবারের। কিন্তু গত বছর সোমেন অসুস্থ হলে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। সোমেনের প্রয়াণের পরেও রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পেয়েছিলেন তাঁরা। আর বিধানসভা ভোটে তাঁকে না জানিয়েই চৌরঙ্গী কেন্দ্রে শিখার নাম ঘোষণা করে দেয় বিজেপি। ক্ষোভ জানিয়ে গেরুয়া শিবিরের টিকিট প্রত্যাখান করে ভোটে লড়েননি শিখা। তখনও মিত্র পরিবারের এই সিদ্ধান্তে খুশি ছিল তৃণমূল শিবির।এবার সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তিনি।