বেতন মেলেনি নয়া শিক্ষকদের

অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম নজরে আসার পরেও উত্তর দিনাজপুর জেলায় নব নিযুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের একাংশের ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। তাতে নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাঁদের।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

এ বার বিষের কৌটো হাতে নিয়ে স্কুল পরিদর্শকের অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন উত্তর দিনাজপুরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। বেতন সমস্যা নিয়ে আধিকারিকরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তখন সমস্যা না মিটলে তাঁরা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেন। তার পরেই নড়েচড়ে বসেন আধিকারিকরা। শুক্রবার কর্ণজোড়ায় স্কুল পরিদর্শকের দফতরে ঘটনা।

Advertisement

অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম নজরে আসার পরেও উত্তর দিনাজপুর জেলায় নব নিযুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের একাংশের ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। তাতে নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাঁদের। নিয়োগ হওয়ার পরে গত আড়াই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। অনেকে নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে এখনও স্কুলে যোগ দিতে পারেননি। তাঁদের একাংশকে এসএমএস পাঠিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন নতুন জায়গায় নিয়োগ করেছেন। বাকিদের কী হবে জানতে গেলে দফতরের আধিকারিকরা জানেন না বলে দুর্ব্যবহার করছেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্যা না মিটলে তাঁরা বিষ খেয়ে স্কুল পরিদর্শকের সামনে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন।

এ দিন তা নিয়ে কথা বলতে গেলে আধিকারিকরা প্রথমে উচ্চবাচ্য করতে চাননি। শিক্ষকেরা সাফ জানিয়ে দেন, কথা বলে তবেই যাবেন তাঁরা। তাঁরা তিন তলায় স্কুল পরিদর্শকের ঘরের বাইরে করিডরে বসে পড়েন। কথা বলতে না চাইলেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেন শিক্ষিকাদের একাংশ। এরপর পুলিশে খবর দিলে পুলিশ যায়। স্কুল পরিদর্শক বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলানো হয়। শিক্ষকদের দাবি, তিনি ফোনে জানান, অন্য জায়গায় থাকায় এখন যেতে পারবেন না। এরপর সাব ইন্সপেক্টর মেহেরাব হোসেন এবং সহকারী স্কুল পরিদর্শক বিশ্বদীপ সরকার তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। মেহেরাব হোসেন বলেন, ‘‘আমার কাছে যা খবর রয়েছে, তাতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫০ শিক্ষকের সমস্যা সমাধান হয়েছে। বাকিদেরও প্রক্রিয়া চলছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ফের তালা দাড়িভিট স্কুলে

অনিয়ম নজরে আসার পর কিছু দিন আগে থেকে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষককে ইতিমধ্যেই এসএসসি থেকে এসএমএস করে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। পুরনো নিয়োগপত্র জমা নিয়ে তাঁদের নতুন স্কুলে রেকমেন্ডেশনের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬৮টি শূন্যপদ রয়েছে। অথচ গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিয়োগ করা হয়েছে ৪২৫ জন। দাড়িভিট কাণ্ডের পর তা নজরে আসতেই হইচই পড়ে। পরে খালি পদের কনভার্সন ঘটানো হয়, যা বেআইনি বলেও অভিযোগ ওঠে। সাসপেন্ড করা হয় স্কুল পরিদর্শককে। অনিয়মের বিষয়টি আরও আগে থেকে ঘটছে এবং তার জেরে দাড়িভিট কাণ্ড বলে পরে অভিযোগ ওঠে। তাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার তৎকালীন স্কুল পরিদর্শক তথা যিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের স্কুল পরিদর্শক হিসাবে কাজ করছিলেন তাঁকেও সাসপেন্ড করা হয়। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পক্ষে জাহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখব। সমস্যা না মিটলে আত্মহত্যা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement