Picnic

New Year 2022: কোথাও মাস্কহীন ভিড়, কোথাও কড়া সতর্কতা, করোনা আবহে বর্ষবরণ উত্তর থেকে দক্ষিণে

শনিবার সূর্যোদয় দেখতে ভিড় জমেছিল দিঘার সৈকতে। দিঘায় ভ্রমণের পাশাপাশি একাংশ পর্যটক হাজির হয়েছেন বনভোজনের উদ্দেশ্যেও। করোনা ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:১০
Share:

দিঘার সৈকতে পর্যটকদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

করোনা আবহে বর্ষবরণে মাতলেন পর্যটকরা। করোনা বিধি মানা নিয়ে প্রশাসনের তরফে সর্বত্রই কড়াকড়ি নজরে এসেছে শনিবার। তবে কোথাও মাস্কহীন ভিড় দেখা গিয়েছে। আবার কোথাও দেখা গিয়েছে কড়া সতর্কতা।

Advertisement

শনিবার সূর্যোদয় দেখতে ভিড় জমেছিল দিঘার সৈকতে। দিঘায় ভ্রমণের পাশাপাশি পর্যটকদের একাংশ হাজির হয়েছেন বনভোজনের উদ্দেশ্যেও। করোনা ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। হোটেলগুলি করোনা বিধিনিষেধ মেনে পর্যটকদের ঘর দিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সৈকতেও করোনা বিধি মানার জন্য মাইকে টানা প্রচার চালানো হচ্ছে। পর্যটকদের একাংশ মাস্ক না পরায় তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নিচ্ছে পুলিশ।
দীর্ঘ সময়ের মন্দা কাটিয়ে সৈকত নগরী পুরনো ছন্দে ফেরায় ব্যবসায়ীমহলেও খুশির হাওয়া।

দিঘা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোশিয়েশানের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হোটেলের ঘরগুলি শুক্রবার রাত থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ। বর্ষবরণে প্রত্যাশামতোই দিঘায় হাজির হয়েছেন কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটক। করোনা আবহে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।’’

Advertisement

নতুন বছরের প্রথম দিনে ভিড় দেখা গিয়েছে হুগলির ব্যান্ডেল চার্চ চত্বরে। অবশ্য ১ জানুয়ারি ব্যান্ডেল চার্চের গেট বন্ধ থাকে। গির্জায় প্রবেশ করতে না পারলেও বাইরে থেকে চার্চ দর্শন করেছেন অনেকে। চার্চের কাছে যে মাঠ রয়েছে সেখানে বনভোজন করছেন বহু পর্যটক। হুগলির অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও ভিড় নজরে এসেছে। বহু জায়গায় দেখা গিয়েছে মাস্কহীন পর্যটকও। নতুন বছরের প্রথম দিন জমজমাট ছিল হাওড়ার গড়চুমুক, গাদিয়াড়ার মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলিও। শিবপুরের বোট্যানিক্যাল গার্ডেনেও ভিড় ছিল। যদিও এখানে বনভোজনের অনুমতি ছিল না। তবে করোনা পর্বে বিধি মানার ক্ষেত্রে সর্বত্রই পর্যটকদের ঢিলেমি নজরে এসেছে।

উচ্ছ্বাস আছে, অথচ হুঁশ নেই। শনিবার এই ছবি দেখা গিয়েছে বাঁকুড়ার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও। শনিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর, বিষ্ণুপুর, শুশুনিয়া পাহাড় এবং বিহারীনাথ পাহাড়ে অজস্র পর্যটক ভিড় করেন। তাঁদের অনেকেই ছিলেন মাস্কবিহীন। বাঁকুড়া স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য আধিকারিক শ্যামল কুমার সোরেন বলেন, ‘‘উৎসবের সময়ে আমাদের আরও বেশি সচেতন থাকা উচিত। এখন সকলেই জানেন মাস্ক পরা বা শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখা কতটা প্রয়োজন। কিন্তু কেউ বিষয়টাকে আমল দিচ্ছে না। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। মানুষ এতটা উদাসীন হলে জেলার করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।’’

শনিবার কল্পতরু উৎসবে মাতে কামারপুকুর মঠ। এ বার বেলুড় মঠ, কাশীপুর উদ্যানবাটী এবং দক্ষিণেশ্বর মন্দির ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকায় কামারপুকুরে ভিড় জমান অনেকেই। দক্ষিণের মতো উত্তরবঙ্গেও একই ছবি। বছরের প্রথম দিন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে গরুমারা, চাপড়ামারি, মূর্তি-সহ বিভিন্ন এলাকায়। বহু পর্যটক মূর্তি নদীর ধারে ভিড় জমান। কেউ মাতেন বনভোজনেও। বহু পর্যটককেই মাস্ক ছাড়াও ঘুরতে দেখা গিয়েছে।কল্পতরু উৎসব পালিত হয় রামকৃষ্ণ মিশনের রায়গঞ্জ শাখাতেও। সেই উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই সেখানে ভক্ত সমাগম হয়। মঠগুলিতে করোনা বিধি নিয়ে যথেষ্ট কড়াকড়ি রয়েছে।

শনিবার ভক্তরা ভিড় করেন তারাপীঠ, কঙ্কালীতলা, নলহাটিশ্বরী, নন্দকেশরীতলা, ফুল্লরাতলা এবং বক্রেশ্বরে। তবে সর্বত্রই কোভিড বিধি পালনে ঢিলেমি নজরে এসেছে। এ ছাড়া বীরভূমের সোনাঝুরি, গোয়ালপাড়া, তিলপাড়াতেও ভিড় জমান পর্যটকরা। সেখানেই দেখা গিয়েছে মাস্কবিহীনদের দাপাদাপি।

শনিবার কোচবিহারের রাজপ্রাসাদ থেকে শুরু করে মদনমোহন মন্দির এবং বিভিন্ন পার্কে সকাল থেকেই দেখা যায় পর্যটকদের ভিড়। রাজপ্রাসাদে প্রবেশে পর্যটকদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তবে রাজপ্রাসাদে প্রবেশের পর মাস্ক নিয়ে ঢিলেঢালা মনোভাব দেখা গিয়েছে অনেকেরই। রাজপ্রাসাদের মিউজিয়াম অ্যাটেনড্যান্ট পার্থপ্রতিম গুপ্ত বলেন, ‘‘রাজপ্রাসাদে প্রচুর পর্যটক ভিড়। প্রত্যেকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ছবি তোলার জন্য অনেকেই মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এটা অত্যন্ত বিপদজনক।’’ কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক শেখ রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘কোচবিহারে যে সমস্ত দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেখানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’’

মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারিতে অবশ্য নিরাশার ছবি দেখা গিয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। করোনার কারণে চার দিন হাজারদুয়ারি বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই খবর না জেনে ঘুরতে চলে এসে হতাশ হয়েছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement