প্রতীকী ছবি
ন্যূনতম যোগ্যতা অপরিবর্তিত রেখেই প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিসর বাড়িয়ে আরও বেশি সংখ্যক প্রার্থীকে জায়গা দেওয়ার ব্যবস্থা করল কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই)। বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারা জানিয়েছে, এ বার থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ৫৫ শতাংশ নম্বর এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিএড-এমএড তিন বছরের ইনট্রিগ্রেটেড কোর্স বা সংহত পাঠ্যক্রম করা থাকলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতার জন্য আবেদন করা যাবে। নতুন ব্যবস্থায় দু’রকম সম্ভাবনা দেখছে শিক্ষা শিবির। ওই মহলের অনেকের ব্যাখ্যা, এর ফলে অনেক বেশি প্রার্থী স্কুলশিক্ষকের পদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন। শিক্ষা শিবিরের অন্য একাংশের আশঙ্কা, এমনিতেই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার অন্ত নেই। তার উপরে এই নতুন ব্যবস্থায় শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বহুলাংশে বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ তীব্রতর হতে পারে।
এর আগে প্রাথমিক থেকে স্কুলের সব স্তরেই শিক্ষকতার জন্য ন্যূনতম যে-শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারিত ছিল, তা একই থাকছে বলে জানিয়েছে এনসিটিই। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন স্কুল স্তরের পরীক্ষায় নম্বর কম থাকলেও স্নাতকোত্তর স্তরে ৫৫ শতাংশ নম্বর পেলে এবং বিএড-এমএড তিন বছরের সংহত পাঠ্যক্রম পাশ করলে শিক্ষকপদের পরীক্ষায় বসা যাবে। এনসিটিই জানিয়েছে, শারীরশিক্ষা ও শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকতার ক্ষেত্রেও আগে ন্যূনতম যে-যোগ্যতামান নির্ধারিত ছিল, তার সঙ্গে স্নাতকোত্তরে ৫৫ শতাংশ নম্বর এবং সঙ্গে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য বিএড-এমএড তিন বছরের সংহত পাঠ্যক্রম পাশের বিষয়টিকে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসাবে গণ্য করা হবে।
এত দিন প্রাথমিক শিক্ষকপদের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর এবং দু'বছরের ডিএলএড পাশ। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এখন কেউ যদি উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশেরও কম নম্বর পান অথচ তাঁর স্নাতকোত্তরে ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকে এবং বিএড-এমএড তিন বছরের সংহত পাঠ্যক্রম করা থাকে, তা হলে তিনিও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সে-ক্ষেত্রে তাঁকে শিক্ষকপদে যোগ দেওয়ার দু’বছরের মধ্যে ডিএলএড বা ছ’মাসের সমতুল কোনও ব্রিজ কোর্স করে নিতে হবে।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা বলেন, “প্রাথমিক স্তরে এখন স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বহু শিক্ষক আছেন। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন পাওয়া তো দূরের কথা, সেই সব শিক্ষককে সার্ভিস বুকে তাঁদের উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ পর্যন্ত করতে দেওয়া হয় না। আমাদের দাবি, স্কুলশিক্ষকদের ক্ষেত্রে অবিলম্বে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনক্রম চালু করতে হবে।”
কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস মনে করেন, এর ফলে আরও বেশি সংখ্যক প্রার্থী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন।