প্রদীপ মজুমদার। ফাইল চিত্র।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই অবস্থায় পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে বাড়তি দায়িত্ব দিল নবান্ন। সেই দায়িত্ব সমন্বয় সাধকের। পঞ্চায়েতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সাত-সাতটি দফতরের সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করবেন তিনি। এই দায়িত্ব বৃদ্ধি প্রদীপের ক্ষমতা বৃদ্ধি কি না, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা ঘিরে সেই জল্পনা আর আলোচনা গভীর হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
বুধবারের লিখিত নির্দেশিকায় মুখ্যসচিব জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনক্রমে পঞ্চায়েতমন্ত্রী নিজের দফতরের সঙ্গে আরও সাতটি দফতরের কাজকর্মের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। সেই দফতরগুলি হল কৃষি, কৃষি বিপণন, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন, খাদ্য সরবরাহ, মৎস্য এবং জলসম্পদ উন্নয়ন।
আধিকারিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ‘কনভারজেন্স’ বা বিভিন্ন দফতরের সমন্বয়ের পদ্ধতি চালু করেছিল রাজ্য সরকার। তাতে কর্মদিবস এবং কাজের পরিধি বাড়ানো গিয়েছে। সেই কাজটাই আরও মসৃণ ভাবে করার জন্য পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে এই বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামবাংলায় এই কাজকর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমন্বয় বাড়লে তাতে সাধারণ মানুষের কাজ এবং সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
আধিকারিক শিবিরেরই অন্য একটি অংশের ব্যাখ্যা, নতুন ব্যবস্থায় ওই সাত দফতরের মন্ত্রীরা কার্যত তাঁদের কাজকর্মের ব্যাপারে দায়বদ্ধ থাকবেন পঞ্চায়েত দফতরের কাছে। সূচি মানলে আগামী বছরই হবে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে একশো দিনের কাজ প্রকল্প, আবাস ও সড়ক যোজনার টাকা বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধীরাও ভূরি ভূরি অভিযোগ তুলছেন পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে। সব মিলিয়ে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য সরকার। তাই নতুন মুখ হিসাবে বর্তমান পঞ্চায়েতমন্ত্রীর হাতে সমন্বয়ের দায়িত্ব থাকলে ভাবমূর্তি সংশোধনের কাজটা জোরালো ভাবে করা যেতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, সংশ্লিষ্ট সাতটি দফতরের মন্ত্রীরা খুব নতুন নন। তাঁরা অভিজ্ঞও। তার পরেও সমন্বয়ের ভার প্রদীপের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার অর্থ, তথাকথিত ‘রাজনৈতিক মুখ’-এর পরিবর্তে প্রশাসনিক ‘মুখ’ তুলে ধরতে চাইছে সরকার। কারণ, মন্ত্রী হওয়ার আগে প্রদীপ মজুমদার মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টার পদে ছিলেন। রাজনৈতিক ভাবে এই বার্তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।