প্রতীকী ছবি
বৌবাজার পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গের কাজ ফের শুরু হয়েছে। সেই কাজ শেষ হলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই চালু হতে পারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ স্টেশন। বুধবার এ কথা জানিয়েছেন পূর্ব রেল এবং কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী। একই সঙ্গে আগামী মার্চের মধ্যে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর এবং ২০২২-এর ডিসেম্বরের মধ্যে নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো চলতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দিন দুয়েক আগে শিয়ালদহ থেকে ইস্ট-ওয়েস্টের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বৌবাজার পর্যন্ত বাকি প্রায় ৮০০ মিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ চার-পাঁচ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। তার পরেই জোড়া সুড়ঙ্গপথের মাধ্যমে হাওড়ার সঙ্গে জুড়ে যাবে শিয়ালদহ।
বৌবাজার পর্যন্ত সুড়ঙ্গের কাজ এখন শিয়ালদহ থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। মেট্রো সূত্রের খবর, নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া, খননকাজের পরে মাটি বার করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এই স্টেশনকেই। ফলে সুড়ঙ্গের কাজ শেষ না হলে ওই স্টেশন চালু করা সম্ভব নয়। বর্তমানে ওই স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তের একাংশের ছাদ খোলা রেখে টানেল বোরিং মেশিন-সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি মাটির নীচে নামানো হয়েছে। ফলে সুড়ঙ্গের কাজ শেষ না হলে ওই ছাদের অংশটুকু বন্ধ করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: দ্বন্দ্ব ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে কাজের বার্তা অভিষেকের
তাই বৌবাজার পর্যন্ত সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হলেই দ্রুত শিয়ালদহ স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ করতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই সেই কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। বাকি কাজ সম্পূর্ণ করতে বেশি সময় লাগবে না বলে মত মেট্রো কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: ৯ হাজারের কম সক্রিয় রোগী, উদ্বেগ কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায়
বর্তমানে সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবায় ট্রেনের মুখ ঘোরাতে শিয়ালদহ স্টেশনের পূর্ব প্রান্তের কেবিন পর্যন্ত আসতে হয়। ফলে ওই স্টেশনের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হলে এবং মাত্র কয়েকশো মিটার লাইন পাতলেই ফুলবাগান থেকে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে যাবে মেট্রো। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই শিয়ালদহ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা বাড়ানোর বিষয়ে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
এ দিন মনোজবাবু জানান, দু’সপ্তাহের মধ্যে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরে হবে মহড়া দৌড়। মার্চের মধ্যেই কলকাতা থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো চলাচলের বিষয়ে আশাবাদী মনোজবাবু। একই সঙ্গে জোকা-বি বা দী বাগ, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর এবং নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রোর কাজেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথে কবি সুভাষ থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু হতে পারে। জোকা-মাঝেরহাট মেট্রোপথের ডিপো নির্মাণ শুরু হয়েছে। ওই দুই মেট্রোপথেই প্ল্যাটফর্ম, স্ক্রিনডোর এবং আধুনিক কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম ব্যবহার করতে চান কর্তৃপক্ষ। এর জন্য আধুনিক রেক তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিকে।
নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রোপথে দেশের সবচেয়ে বড় স্টেশন তৈরি হচ্ছে বিমানবন্দরে। সেই স্টেশনের সঙ্গে বিমানবন্দরের প্রবেশপথকে জুড়তে পৃথক সাবওয়ে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। মোবাইলের মাধ্যমে মেট্রোর টিকিট কাটার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ জন্য উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশনে ভাড়া সংগ্রহের গেট বদলাতে দরপত্রও ডাকা হয়েছে।