ফাইল চিত্র।
ফরাক্কার নতুন ‘নেভিগেশনাল লক’ তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে গঙ্গা নদীতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাবে। এমনই দাবি করেছে ওই লক তৈরিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো লিমিটেডের অধীনস্থ এল অ্যান্ড টি জিওস্ট্রাকচার। জাহাজের মসৃণ যাতায়াতের জন্যই মূলত এই উদ্যোগ বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
সংস্থার এক আধিকারিকের বক্তব্য, এই নেভিগেশনাল লক তৈরি হয়ে গেলে ফরাক্কা থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ অবধি ইলিশের জোগান বাড়বে। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ গঙ্গার উজান বেয়ে চলে আসবে ভারতের দিকে।
বর্তমানে ফরাক্কা বাঁধের স্লুইস গেটটির জলস্তর যেখানে রয়েছে, এ বার তার চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হবে জলস্তর। যার অর্থ, স্লুইস গেট এতদিন যতটা খোলা থাকছিল, তার চেয়ে অনেকটা বেশি খোলা হবে। এবং তা প্রতিদিন চার ঘণ্টার জন্য সেটি খোলা থাকবে। ওই বেসরকারি সংস্থার কর্তাদের দাবি, এর ফলে পদ্মা নদীর নোনতা জল থেকে গঙ্গা নদীর মিষ্টি জলে সাঁতার কেটে আরও বেশি সংখ্যক ইলিশের চলে আসার সম্ভাবনা বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গায় ইলিশ মাছের ডিম পাড়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।
সংস্থা সূত্রের খবর, ১৯৭৬ সালে ফরাক্কা বাঁধের প্রথম নেভিগেশনাল লক তৈরির পরে প্রয়াগরাজ পর্যন্ত ইলিশ মাছের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। ফরাক্কায় নতুন নেভিগেশনাল লক চলতি বছর জুন থেকে খুলে দেওয়ার কথা। এই কাজের বরাত কেন্দ্রীয় সরকারের ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অথরিটি ওই বেসরকারি সংস্থাকে দিয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, ফরাক্কা বাঁধের ফিডার খালের উপর নেভিগেশনাল লকটি এখন তৈরি হচ্ছে। ফরাক্কার বর্তমান লক গেট ১৯৭৮ সাল থেকে চালু রয়েছে। নতুন নেভিগেশনাল লক তৈরির ক্ষেত্রে আধুনিক ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। এর সঙ্গে প্রতিটি লক গেটকে কন্ট্রোল রুম থেকে রিমোট কন্ট্রোল মারফত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
কলকাতা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে ফরাক্কা বাঁধের নেভিগেশনাল এই লক তৈরি হলে কলকাতা বন্দরও প্রভূত লাভ করবে বলে মনে করছেন এলএন্ডটি জিওস্ট্রাকচারের চিফ এগ্জিকিউটিভ এস কানাপ্পান। তিনি বলেন, “আমরা খুশি যে এই নেভিগেশনাল লক তৈরির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের দিয়েছে। এর ফলে গঙ্গার পরিবেশ এবং অভ্যন্তরীণ প্রাণীদের জীবনেরও পার্থক্য তৈরি হবে। সঙ্গে জাহাজ যাত্রার পথও সুগম ও দ্রুত হবে।’’
নতুন নেভিগেশনাল লকটি দৈর্ঘ্য ২৫০মিটার, উচ্চতা ২৫ মিটারের কিছু বেশি বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।