ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের সমাবেশের দিকে লক্ষ্য রেখে ত্রিপুরায় যে দিন সভা-সমাবেশে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল, সে দিনই কলকাতায় বসে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিরোধীদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় না। ত্রিপুরার উদাহরণ তুলে তাঁকে প্রশ্ন করার পরে সুকান্ত বলেন, ‘‘সেখানে যদি কিছু হয়ে থাকে, তা ব্যতিক্রম। ব্যতিক্রম কখনও নিয়ম হয় না। আমি মনে করি, ত্রিপুরায় তৃণমূল, সিপিএম সকলেরই রাজনীতি করার, সভা-সমাবেশ করার অধিকার আছে।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু দিন ধরে ত্রিপুরায় সমাবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু সে রাজ্যের প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে না। মঙ্গলবারও করোনা সংক্রমণের যুক্তি দেখিয়ে অভিষেকের সমাবেশে অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে ত্রিপুরা প্রশাসন। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সুকান্ত অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘আমরা ত্রিপুরায় অভিষেকবাবুকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে তাঁকে বলি, উনি গোটা দেশ ঘুরুন। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, পঞ্জাবের মতো অন্য রাজ্যে যান। তা হলে চোখ খুলবে, কূপমণ্ডুকতা ঘুচবে, বিরোধীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, সেটা শিখতে পারবেন।’’
এই প্রসঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তালিবানের সঙ্গে তুলনা করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের হাতে রাজ্যের তালিবানিকরণ হয়েছে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আফগানিস্তানে কিছু মানুষ জোব্বা পরে বন্দুক হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু তাঁরাই তালিবান নন। আমার মত ঠিক, সেটা না মানলেই তোমাকে মেরে ফেলব— এই মানসিকতা হল তালিবানি মানসিকতা। যেটা এ রাজ্যে শাসক দলের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। তৃণমূল বিরোধী রাজনীতি করার জন্য বিজেপি কর্মীকে রাস্তায় পিটিয়ে মারা হচ্ছে, তার কুকুরগুলিকেও ছাড়া হচ্ছে না। বিজেপি, সিপিএম— এই সব বিরোধীরা সম্মানের সঙ্গে রাজনীতি করতে পারছে না।’’
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগই তোলে সেখানকার বিরোধী সিপিএম। তা হলে কি ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের আচরণ তালিবানদের মতো? এই প্রশ্নের জবাবেই সুকান্ত জানান, ত্রিপুরায় তেমন কিছু হয়ে থাকলে তা ব্যতিক্রম।
তৃণমূলের বর্যীয়ান সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় অবশ্য সুকান্তর আক্রমণের জবাবে বলেন, ‘‘বিজেপির অন্য দলকে তালিবান বলা হাস্যকর! যেখানে যেখানে বিজেপি শাসন আছে, সেখানকার মানুষ জানেন তালিবানিকরণের অর্থ কী। খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের পদ্ধতি, বাক-স্বাধীনতা— এ সবের উপরেই বিজেপি কী ভাবে কর্তৃত্ব করে, তা তাঁরা জানেন।’’