Coronavirus in West Bengal

এ বার ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে বাধা করোনা-যোদ্ধা বিডিওকে

বাড়ির মালিক এবং প্রতিবেশীরা করোনা প্রসঙ্গ তুলে সেখানে থাকা যাবে না বলে তাঁর পথ আগলান এবং বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৮
Share:

বাধার মুখে সুরশ্রী। রবিবার। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

তিনি এলাকার ‘সেফ হাউস’-এর দেখভাল করছেন। কোয়রান্টিন শিবিরে থাকা আক্রান্তদের তদারক করছেন। এত দিন সমস্যা হয়নি। কিন্তু হুগলির গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির পাঁচ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় রবিবার নিজের ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে বাধা পেলেন বিডিও সুরশ্রী পাল। ঠিক যেমন এর আগে রাজ্যের কিছু নার্স এবং চিকিৎসকের ক্ষেত্রে হয়েছিল।

Advertisement

রবিবার আরামবাগের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লিতে সুরশ্রীর ভাড়াবাড়ি। বাড়ির মালিক এবং প্রতিবেশীরা করোনা প্রসঙ্গ তুলে সেখানে থাকা যাবে না বলে তাঁর পথ আগলান এবং বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। বিডিও তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও কাজ না-হওয়ায় মহকুমাশাসক এবং পুলিশকে ফোন করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি বাগে আনতে না-পারায় বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে বলে অভিযোগ। ঘণ্টাদুয়েক এই অশান্তির পর পুলিশি নিরাপত্তায় বিডিও ভাড়াবাড়িতে ঢোকেন। বিডিওকে হেনস্থার অভিযোগে পুলিশ বাড়ির মালিক, তাঁর স্ত্রী-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। লাঠিপেটার অভিযোগ পুলিশ মানেনি। বিডিও বলেন, “ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে যাচ্ছিলাম যখন, তখন পঞ্চায়েত সমিতিতে করোনা আক্রান্তের প্রসঙ্গ তুলে ঝামেলা হয়। ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। পরে ঝামেলা মিটে যায়।” মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘আমরা তো এলাকার মানুষের জন্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে মানুষ সচেতন নন। মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। বোঝানো হচ্ছে।”

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন পর শনিবার সন্ধ্যায় হাওড়ায় নিজের বাড়ি যান সুরশ্রী। রাতেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ ৬ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে রবিবার সকালেই তিনি আরামবাগে ফেরেন। বাড়ির মালিকই প্রথম তাঁকে ঘরে ঢুকতে আপত্তি জানান। প্রতিবেশীরাও শামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, ব্লকের ৫ জনের করোনা হয়েছে। বিডিও নিজেও যে সংক্রমিত হতে পারেন, এমন আশঙ্কা কি অমূলক? বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মৃণাল শর্মার প্রশ্ন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষের আতঙ্ক থাকতেই পারে। সুষ্ঠু মোকাবিলা না করে স্রেফ বিডিও বলেই কি আমাদের মারধর, গ্রেফতার করা হল?”

Advertisement

করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য তথা এসএসকেএমের মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘‘এ ধরনের আশঙ্কা একেবারেই অমূলক। নাক-মুখ মাস্কে ঢেকে রাখা এবং ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার যে সতর্কবিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে, সেটাই আসল। বিডিও, চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছেন। এ ধরনের সামাজিক প্রতিরোধ তৈরি করলে কোভিডের সঙ্গে যে লড়াই চলছে, সেটাই দুর্বল হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement