আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মনোজ বর্মা। ছবি: এক্স থেকে।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় দেখা গিয়েছিল, তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ তাজিমুল হক ওরফে ‘জেসিবি’ এক যুগলকে রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াহের ক্লাবে এক জনকে চ্যাংদোলা করে পেটানোর ভিডিয়ো নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যে ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হওয়া আর এক তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিংহের। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, স্থানীয় স্তরে পুলিশ কি নিষ্ক্রিয়? কী ভাবে স্থানীয়েরা আইন হাতে তুলে নিয়ে নিজেদের মতো বিচার করছে? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্নেই রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা বলেছেন, ‘‘ঠিকই। এটা একটা ইস্যু। এ বিষয়ে আমরা আমাদের ফিল্ড অফিসারদের (যে পুলিশ অফিসারেরা থানা স্তরে কাজ করেন) সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে গণপিটুনি এবং সালিশি সভা রুখতে বিবিধ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জেলায় জেলায়। মূলত পুলিশের যে অংশ টহল দেয়, সিভিক ভলান্টিয়ারদের যে অংশ এলাকায় নজরদারি চালায়, তাদের এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকার পুজো কমিটি, ক্লাব, মাদ্রাসাগুলিকেও ব্যবহার করার করার ভাবনা রয়েছে পুলিশমহলে। আড়িয়াদহের ঘটনা প্রসঙ্গে মনোজ আরও বলেছেন, ‘‘ভাইরাল ভিডিয়োয় যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই তারাও গ্রেফতার হবে।’’
মনোজের সঙ্গেই বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আড়িয়াদহের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনটি বিষয় ব্যাখ্যা করেন। আলাপন বলেন, ‘‘এক, আড়িয়াদহের ঘটনা ২০২১ সালের মার্চের। দুই, নিগৃহীত ব্যক্তি পুরুষ। এবং তিন, এই নিয়ে জয়ন্ত সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ বার। ২০১৬ থেকে এ পর্যন্ত তাকে বারংবার গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ অনেকের মতে, আলাপন বোঝাতে চেয়েছেন, জয়ন্ত সম্পর্কে ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার’ যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।
উল্লেখ্য, কোনও কোনও অংশ থেকে বলা হয়েছিল, আড়িয়াদহ তালতলা ক্লাবে চ্যাংদোলা করে যাঁকে পেটানো হয়েছিল, তিনি মহিলা। কিন্তু আলাপন জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে, নিগৃহীত পুরুষ। তবে যে কোনো লিঙ্গের ব্যক্তির নিগ্রহই নিন্দার বলে মন্তব্য করেছেন আলাপন। পাশাপাশিই তিনি বলেছেন, ‘‘উপনির্বাচনের সময়ে পুরনো একটি ঘটনার লিঙ্গপরিচয় বিকৃত করে যে ভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে, তাতে রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন।’’