নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের সভায় বক্তা নওশাদ সিদ্দিকী। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সভা করছেন নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর গলায় কড়া সমালোচনা তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্থানীয় পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি আক্রমণ করলেন রাজ্য সরকারকে। দুষেছেন পুলিশকেও। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজকর্মের প্রসঙ্গও উঠেছে বক্তৃতায়। তবে, স্থানীয়দের একাংশের কথায়, সেই সূত্রে সুর অনেকটাই নরম। বরং বিরোধী দলনেতা তথা স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর নাম একবারই নিয়েছেন তিনি। তা-ও সে ক্ষেত্রে তাঁকে ‘পরামর্শ’ই দিয়েছেন নওশাদ।
এর আগে কয়েক বার তাঁকে শুভেন্দু প্রসঙ্গে নরম অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে। নন্দীগ্রামের সভায় নওশাদ কী বলেন, তা নিয়ে তাই কৌতূহল ছিল। পঞ্চায়েত হোক, বা বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরে আইএসএফের কর্মসূচি সে ভাবে নজরে পড়েনি। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে আইএসএফের সভার আয়োজন ছিল বেশ বড়ই। সেখানে নওশাদ রাজ্যকে দুষে বলেন, ‘‘শুধু নীল-সাদা রং করলেই উন্নয়ন হয় না। নন্দীগ্রামে যে নীল-সাদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আছে, সেখানে কী চিকিৎসা পরিষেবা মেলে, তা আপনারাই ভাল জানেন।’’ তিনি সরব হন এলাকার বেহাল রাস্তাঘাট নিয়েও। একই সঙ্গে সমালোচনা করেন পুলিশের ভূমিকারও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হলে নেতারা মালা দিয়ে চলে যান। কিন্তু অভিযুক্ত ধরা পড়ে না। পুলিশ তো তৃণমূলের দালাল হয়ে কাজ করে।’’
কেন্দেমারি ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণের দাবি প্রসঙ্গে এ দিন একবারই শুভেন্দুর প্রসঙ্গ তুলেছেন নওশাদ। নরম সুরেই বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ককে বিধানসভায় তোলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। নন্দীগ্রাম-বাজকুল রেলপথের কথাও তোলেন নওশাদ। তবে সেখানেও কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেননি। শুধু তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে রেলমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘আরও একবার বিজেপির দালালি ফাঁস হয়ে গেল নওশাদের । সামনে লোকসভা নির্বাচন। বিজেপি জানে সংখ্যালঘু ভোট ওদের বিরুদ্ধে যাবে। তাই পরিকল্পনা করে নওশাদকে নন্দীগ্রামে পাঠিয়েছে।’’ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পাল পাল্টা বলছেন, ‘‘তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখতে পারছে না। তাই নওশাদের মধ্যে বিজেপির জুজু দেখতে পাচ্ছে।’’ আর নওশাদের মন্তব্য, ‘‘অভাব-অভিযোগ পূরণও করবেন না, আর তা বললেই বিজেপির দালাল!’’