ফাইল চিত্র।
সুন্দরবনে বিধি ভেঙেই পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। তা জেনেও কোনও পদক্ষেপ করেননি জেলাশাসক। এমনকি, জাতীয় পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল এ ব্যাপারে পদক্ষেপের রিপোর্ট চাইলেও ১০ মাস পুরনো একটি রিপোর্ট আদালতে পাঠিয়েছেন জেলাশাসক পেরুমল উলগানাথন। তা দেখেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত এবং জেলাশাসককে ‘নিষ্ক্রিয়’ এবং ‘অযোগ্য’ বলেও উল্লেখ করেছে ট্রাইবুনাল।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ, জেলাশাসকের সার্ভিস বুকে আদালতের পর্যবেক্ষণ নথিবদ্ধ করতে হবে। সুন্দরবনের ওই ক্ষেত্রে উপকূল বিধি এবং পরিবেশ আইন রক্ষায় মুখ্যসচিবকে পদক্ষেপ করতে হবে। স্থানীয় পুলিশকে ওই নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। জেলাশাসকের কাছে তাঁর নিষ্ক্রিয়তার ব্যাখ্যাও চেয়েছে আদালত। আগামী ৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানিতে তাঁকে সশরীরে হাজির হতেও বলা হয়েছে।
গোসাবা ব্লকের বালি-১ পঞ্চায়েত এলাকার আমলামেথিতে একটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছিল। উপকূলীয় বিধি ভেঙে এবং নদী থেকে নির্বিচারে মাটি তুলে ওই পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে বলে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম নামে একটি সংগঠন। সেই মামলাতেই জেলাশাসকের রিপোর্ট তলব করেছিল আদালত। জেলাশাসক যে পরিদর্শন রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তাতে পরিদর্শনের তারিখ রয়েছে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে ডিসেম্বরে। অভিযোগ, ফেব্রুয়ারি মাসের পরিদর্শনে বিধি ভঙ্গ লক্ষ্য করা গেলেও জেলাশাসক কী পদক্ষেপ করেছেন তার উল্লেখ নেই। যা থেকেই আদালতের পর্যবেক্ষণ, সব জেনেশুনেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক চুপ করে বসেছিলেন।
পরিবেশবিদদের মতে, সুন্দরবনে পর্যটনের নামে একের পর এক জায়গায় পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রশাসনের সামনে তা চললেও কোনও পদক্ষেপ করা হয় না বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ অরণ্য সাফ করে একরের পর একর জমিতে মাছের ভেড়ি করা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টেও মামলা হয়েছিল। সেখানেও প্রশাসনের একাংশের গাফিলতির অভিযোগ উঠে আসে।