নাসিবুল শেখ। নিজস্ব চিত্র
বোমা বিস্ফোরণে রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে প্রাণে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরই এককালের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী নাসিবুল শেখ। বিস্ফোরণ যখন ঘটে তখন জাকিরকে নিজের শরীর দিয়ে আড়াল করেছিলেন তিনি। জাপটে ধরেছিলেন তাঁকে। এতে জাকিরের শরীর বিস্ফোরণের আঁচ থেকে কিছুটা বেঁচেছে ঠিকই। তবে মন্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের হাত-পা হারিয়েছেন নাসিবুল। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। একটা হাত ও পা হারিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী কৃত্রিম হাত-পা বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য সরকারের অর্থসাহায্যও পাবেন। কিন্তু নাসিবুলের পরিবার চান, যারা তাঁদের এই হাল করেছে, তারা কঠিন শাস্তি পাক।
এক সময়ে জাকির হোসেন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ছিলেন নাসিবুল। জাকিরের সব কাজেই তাঁকে দেখা যেত সক্রিয় ভূমিকায়। তবে জাকিরের জন্য যে নাসিবুল প্রাণ দিতেও প্রস্তুত, বুধবারের ঘটনায় তার প্রমাণ পেয়ে রীতিমতো বিস্মিত জাকিরের ঘনিষ্ঠমহল।
যদিও জাকিরকে বাঁচাতে গিয়ে যে ভাবে নিজের হাত পা হারিয়েছেন নাসিবুল তাতে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছে তাঁর পরিবার। আগামী দিনে আর্থিক সঙ্কটের কথা ভেবেও চিন্তিত নাসিবুলের আত্মীয়রা। নাসিবুলের মা মিরাতুন বিবি রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন জখম ছেলেকে দেখে। হাসপাতালে এসে নাসিবুলের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। মিরাতুনের কথায়, ‘‘আমার একটাই চাওয়া, ছেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। এমন বোমা বিস্ফোরণ হবে, আর আমার ছেলেকে তাতে এই ভাবে জখম হতে হবে তা ভাবতেই পারিনি।’’
হাসপাতালে নাসিবুল শেখ।
নাসিবুলের বোন ইদান খাতুন অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন। তবে একজন মন্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে দাদা বোমা বিস্ফোরণ হাত পা হারিয়েছেন এটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। ইদান জানিয়েছেন, ‘‘আমরা মর্মাহত। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করুক এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক এটাই চাইব।’’