আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। —নিজস্ব চিত্র।
নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারির পিছনে বিজেপি-র দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তাঁর দাবি, বিধানসভা নির্বাচনে হার সহ্য করতে না পেরে বাংলায় রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। সে উদ্দেশ্যসাধনেই তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। কেন্দ্রের নির্দেশেই সিবিআই চলছে বলেও তোপ দেখেছেন নারদ মামলায় আর এক অভিযুক্ত অপরূপা।
সোমবার সকালে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিনা নোটিসে গ্রেফতার করে সিবিআই। নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে ওই ৪ জনকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে গিয়েছেন সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসের কার্যালয়ে। সিবিআইয়ের গ্রেফাতারির নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। এই আবহে তৃণমূলের সাংসদ অপরূপার দাবি, “বাংলায় ২১৩টি আসনে জিতে তৃণমূল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করায় এই হার হজম করতে পারছে না বিজেপি। এটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরির চেষ্টামাত্র।” তাঁর মতে, “এই অতিমারি পরিস্থিতিতে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হলেও কেন জোড়াফুল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে না সিবিআই, সে প্রশ্নও তুলেছেন অপরূপা। শুভেন্দু-মুকুলের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, “যাঁরা যাঁরা শিবির পাল্টেছেন, তাঁরা হচ্ছেন পরিষ্কার। আর বাকিরা খারাপ।” অপরূপার আরও দাবি, “(গ্রেফতারির মাধ্যমে) আমাদের মতো তৃণমূলের কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তবে আমরা সব কিছুরই মোকাবিলা করব।”
নারদ-কাণ্ডের অভিযুক্ত হিসাবে সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতার কথাও জানিয়েছেন অপরূপা। তিনি বলেন, “সিবিআই আমাকে যত বার নিজাম প্যালেসে ডেকেছে, আমি গিয়েছি। যা তথ্য চেয়েছে, জমা দিয়েছি।” তবে যিনি ওই স্টিং অপারেশন করেছিলেন, সেই ম্যাথু স্যামুয়েলকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ম্যাথু স্যামুয়েলকে কেন ধরা হচ্ছে না? তিনি কোথা থেকে টাকা পেলেন? এটা তাঁকে কেন জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না?”