পুলিশের গাড়িতে বাড়ির পথে ববি। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্সি জেল থেকে চেতলার বাড়িতে ফিরলেন ফিরহাদ (ববি) হাকিম। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রেসিডেন্সি জেল থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে চেতলার বাড়িতে ফেরেন তিনি।
গৃহবন্দি ফিরহাদকে আদালতের নির্দেশে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। যার ফলে মন্ত্রী হিসেবে তাঁর কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটবে বলেই মনে করছেন ফিরহাদের কন্যা প্রিয়দর্শিনী। তাঁর কথায়, ‘‘বাবার হাতে পেন্সিল দিয়েছে কোর্ট। কিন্তু সিসটা ভেঙে দিয়েছে!’’
পাশাপাশিই প্রিয়দর্শিনী তৃণমূলের সদস্য-সমর্থক এবং ফিরহাদের অনুরাগীদের জানান, তাঁরা যেন সংশোধনাগারের ফটকে বা চেতলার বাড়ির আশেপাশে ভিড় না জমান। তাতে ‘আইনি জটিলতা’ তৈরি হতে পারে। বস্তুত, ‘গৃহবন্দি’ থাকলেও ফিরহাদ বাড়ি ফিরতে পারেন, সেই খবর পেয়েই চেতলায় তাঁর বাড়ির আশেপাশে ভিড় জমতে শুরু করেছিল। কিন্তু পুলিশ এসে গোটা এলাকাটি দুপুরের পর থেকেই ঘিরে দেয়। দু’পাশে গার্ড রেল লাগিয়ে ফিরহাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সামনেও পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। যাতে উৎসাহীরা সেখানে ভিড় না জমাতে পারেন। আদালতের নির্দেশ শোনার পর প্রিয়দর্শিনী সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে দাঁড়িয়েই বলেন, ‘‘বাবা কিন্তু জামিন পাননি। উনি কিন্তু এখনও অ্যারেস্টেড। তাঁকে হাউস অ্যারেস্ট হয়ে থাকতে হবে। ফলে কেউ এমন কিছু করবেন না, যাতে আইনি জটিলতা তৈরি হয়’’
সংশোধনাগার থেকে পুলিশের একটি সাধারণ গাড়িতে বাড়ি পৌঁছন ফিরহাদ। কয়েক মিনিটেই সংক্ষিপ্ত ওই দূরত্ব অতিক্রম করেন তিনি। আগে-পিছে ছিল পুলিশের গাড়ি। ফিরহাদ ফিরছেন শুনে তাঁর পাড়াপড়শিরা ভিড় জমিয়েছিলেন আশপাশের বাড়ির বারান্দায়। ফিরহাদ বাড়ির সামনের রাস্তায় নামার পর তাঁরা হাত নাড়েন। ফিরহাদও প্রত্যুত্তরে হাত নেড়ে নীরবে বাড়িতে ঢুকে যান।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই ফিরহাদের জামিনের আবেদনের শুনানি প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে একটি ক্যাভিয়েট দাখিল করেছেন প্রিয়দর্শিনী। সিবিআই যাতে এ সংক্রান্ত মামলায় নতুন কোনও আবেদন জানিয়ে আদালতে একতরফা শুনানি করাতে না পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই ক্যাভিয়েট।
ঘরে বসে সরকারি কাজ করার নির্দেশ দিলেও আদালত জানিয়েছে, আপাতত কোনও দলীয় নেতা-কর্মী এমনকি, সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গেও ফিরহাদ দেখা করতে পারবেন না। সব কাজই করতে হবে অনলাইনে। অনলাইনে ফাইল দেওয়া-নেওয়া হবে, আলোচনা করতে হবে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে। সেই ভিডিয়ো কনফারেন্সেরও বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করে রাখতে হবে।