নানুরের তৃণমূল নেতা (ডান দিকে) কাজল শেখের বিরুদ্ধে তাঁকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ করেছেন সেখানকার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি রিঙ্কু চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
কালীঘাটের ভার্চুয়াল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, বেশি কথা বললে দল তাঁকে শোকজ় করতে পারে। তবে সেই হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর দিনই শনিবার নানুরের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি রিঙ্কু চৌধুরীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখের বিরুদ্ধে। এর জেরে বীরভূমের নানুরে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি বিরোধীদের।
শুক্রবার বীরভূম জেলার কোর কমিটির অঞ্চল সভাপতি এবং তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, সে সময় কাজল শেখকে ধমক দিয়েছিলেন তিনি। এর পরেও তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ রিঙ্কুকে মারধরের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই।
নানুরের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি রিঙ্কুর দাবি, কাজলের সঙ্গে মিলে তাঁকে মারধর করেছেন নানুরের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যও। যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুব্রত।
গত কয়েক দিন ধরে নানুরে কাজল শেখ এবং কেরিম খানের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি বিরোধীদের। এলাকায় অনুব্রতর পাশাপাশি, কেরিমের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রিঙ্কু। তাঁর অভিযোগ, প্রতি দিনের মতো নানুর পার্টি অফিসে বসেছিলেন তিনি। সে সময় সুব্রত ভট্টাচার্য এসে তাঁকে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় চেয়ার, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন সুব্রত। এর পর দলবল নিয়ে কাজলও তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। রিঙ্কু বলেন, ‘‘আমি পার্টি অফিসে বসেছিলাম। হঠাৎ অফিসে ঢুকে সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলের কোনও লোক নানুরের পার্টি অফিসে বসতে পারবেন না।’ এর পর আমাকে চেয়ার, লাঠি দিয়ে মারধর করেন সুব্রত। পরে কাজল শেখ এসেও বেদম পেটান।’’
যদিও রিঙ্কুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুব্রত। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আমি পার্টি অফিসে ঢুকে দেখলাম, রিঙ্কু বসে রয়েছেন। সেখানে কালীঘাটের বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে নানা রকম কটূক্তি করছিলেন তিনি। তাতে আমাদের কমবয়সি ছেলেরা তেতে উঠেছিল। সে সময় অবাঞ্ছিত কোনও কিছু ঘটার আশঙ্কায় ওঁকে পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলি। কারণ ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে ছিল। এর পর ওঁকে আমাদের ছেলেরা পার্টি অফিস থেকে বার করে দেয়।’’