নন্দিনী চক্রবর্তীকে নতুন দায়িত্ব দিল রাজ্য সরকার। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের প্রধান সচিব ছিলেন। কিন্তু সেই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে নন্দিনী চক্রবর্তীকে পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রসচিব হিসাবে ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
এর আগে এই পদের দায়িত্বে ছিলেন বিপি গোপালিক। কিন্তু রবিবার তাঁর পদোন্নতি হয়েছে। রবিবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। ফলে শূন্য হয়ে যাচ্ছিল তাঁর ছেড়ে যাওয়া স্বরাষ্ট্রসচিব পদটি। রবিবার সেই পদেই নিয়োগ করা হল নন্দিনীকে।
এই পদে কাকে নিয়োগ করা হবে, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল প্রশাসনিক স্তরে। এর মধ্যে অর্থ সচিব মনোজ পন্থ, বন দফতরের সচিব বিবেক কুমার, শ্রম দফতরের সচিব বরুণ রায়ের নাম উঠে এসেছিল। এ ছাড়া তালিকায় ছিল এক বরিষ্ঠ আমলা প্রভাত মিশ্রের নামও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিকে ছিঁড়ল নন্দিনীর ভাগ্যেই।
এত দিন পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বা প্রধান সচিবের দায়িত্বে ছিলেন নন্দিনী। রবিবার জারি করা সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নন্দিনীকে পর্যটন দফতরের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র এবং পাহাড় সংক্রান্ত বিষয়ের প্রধান সচিব হিসাবে নিয়োগ করা হল। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তিনি এই সমস্ত দায়িত্বই সামলাবেন। এ ছাড়া নন্দিনীর হাতে মেদিনীপুর ডিভিশনের অতিরিক্ত কমিশনারের দায়িত্বও থাকছে।
নন্দিনীকে নিয়োগের নোটিফিকেশন। —নিজস্ব চিত্র।
নন্দিনী ১৯৯৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার। অতীতে রাজ্যের বহু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। বাম আমলে তো বটেই, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে নন্দিনী মমতার ‘প্রিয় পাত্রী’ হয়ে ওঠেন বলে জানা যায়। সেই সময় শিল্পোন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং তথ্য সংস্কৃতি দফতরের সচিবের মতো গুরুদায়িত্ব তিনি একসঙ্গে সামলেছেন। যদিও পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মতানৈক্যের কারণে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব কমতে থাকে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। তবে সম্প্রতি সেই দূরত্ব কিছুটা কমেছিল।
রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের প্রধান সচিব ছিলেন নন্দিনী। রাজভবনে যাওয়ার পরেই তিনি ‘শাসকদলের লোক’ তকমা পান। রাজভবন সূত্রে খবর, সেই তকমার কারণেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে নন্দিনীকে সরানো হয় রাজভবন থেকে। সূত্রের খবর, রাজ্যের বিজেপি নেতারা রাজভবনে তাঁর উপস্থিতি পছন্দ করছিলেন না। এ নিয়ে রাজভবনের উপর তাঁরা চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বলেও জানা যায় রাজনৈতিক সূত্রে। কারণ, তাঁরা মনে করেছিলেন, রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের প্রথম দিকের সুসম্পর্কের কারণ আসলে তিনিই। এর পর নন্দিনীকে পর্যটন সচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।