ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন নাফিসা আলি ও লাকি আলি। নিজস্ব চিত্র।
গোয়ায় সাফল্য পাক তৃণমূল। এমনটাই বলছেন কংগ্রেসের এক নেত্রী। এক সময় যিনি মমতার বিরুদ্ধে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছেন। তিনি আর কেউ নন, প্রাক্তন মডেল, অভিনেত্রী তথা রাজনীতিক নাফিসা আলি। এক সময়ের সেই প্রতিদ্বন্দ্বীই এখনও কংগ্রেসের সদস্যা। তা সত্ত্বেও তিনি চাইছেন গোয়ার আগামী বিধানসভা ভোটে মমতার দলের সাফল্য। শনিবার তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই ডেরেকের সঙ্গে দেখা করেছেন গায়ক লাকি আলিও। ডেরেক-লাকির সাক্ষাৎ ‘সৌজন্যমূলক’ বলে ব্যাখ্যা করা হলেও, নাফিসা কিন্তু তাঁর মনের কথা বলেছেন প্রকাশ্যেই।
নাফিসা বলেছেন, ‘‘আমি খুশি যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস গোয়া নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোয়ার উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। এখানকার মানুষের এটা অধিকার।’’ কলকাতাতেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা নাফিসার। লা মার্টিনিয়ার স্কুল থেকে পড়াশুনো করেই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাত্রা তাঁর। অনেক বছর কলকাতায় না থাকলেও, নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন বাংলা ও তার রাজনীতির। সম্প্রতি ভবানীপুরের উপনির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে মমতার জয়ের পর তাঁকে ‘বেঙ্গল টাইগ্রেস’ বলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। সেই নাফিসাই তৃণমূলের গোয়ার ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
নাফিসার কলকাতা যোগকে কাজে লাগাতে ২০০৪ সালে তাঁকে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসনে প্রার্থী করে কংগ্রেস। রাজনীতিতে আনকোরা নাফিসা তৃতীয় স্থানে শেষ করে পরাজিত হন মমতার কাছে। হারের পরেই মমতাকে কংগ্রেসে ফেরার আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি। আর সেই লোকসভা ভোটে তৃণমূলের একমাত্র সাংসদ হিসেবে জয় পেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু গত ১৭ বছরের ভারতীর রাজনীতির চরিত্রে বিপুল বদল এসেছে। ২০০৯ সালে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়ে লখনউ আসন থেকে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন নাফিসা। পরে ফিরে আসেন কংগ্রেসে। তিনি কংগ্রেসে সনিয়া গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
এমন একজন ব্যক্তিত্বের সমর্থন পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি তৃণমূল শিবির। তাঁদের কথায়, মমতা যে দেশে মোদী-বিরোধী আন্দোলনের একমাত্র মুখ তা নাফিসার মতো কংগ্রেস নেত্রীর কথাতেই স্পষ্ট। আর গোয়ায় যে তৃণমূল জিতবে, এবং ভাল প্রশাসন উপহার দিতে পারবে, তা-ও নাফিসার বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।