প্রথম প্রশ্নে চিনতে পারেন নি। তবে পরে জেরার অন্য প্রশ্নে ওই ব্যক্তিকেই পুলিশ কর্মী বলে চিহ্নিত করলেন নবদ্বীপ হাসপাতালের নার্স তৃপ্তি ব্যানার্জি।
মঙ্গলবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে সাক্ষ্য দেন ঘটনার রাতে নবদ্বীপ হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্স তৃপ্তি ব্যানার্জি। সাক্ষ্যের শুরুতেই নদিয়ার অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলী বিকাশকুমার মুখোপাধ্যায় সাক্ষীর কাছে জানতে চান ঘটনার দিন তিনি কোথায় ছিলেন। সাক্ষী জানান, নবদ্বীপ হাসপাতালে মেল ওয়ার্ডে ওই দিন রাত ৮টা থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত তাঁর ডিউটি ছিল। আইনজীবী জানতে চান, সাক্ষীই সজল ঘোষের মৃত্যুর পরে ডেথ রেজিস্টার লিখেছিলেন কিনা এবং সন্তু ভৌমিকের ডিসচার্জ রেজিস্টার লিখেছিলেন কি না। আদালতে লেখা শনাক্ত করেন সাক্ষী।
এরপরে জেরা শুরু করেন অভিযুক্তদের আইনজীবী সামসুল ইসলাম মোল্লা। সাক্ষীকে হাসপাতালের ডিসচার্জ রেজিস্টার দেখিয়ে তিনি বলেন এতে সেই রাতে কোন সময়ে সন্তু ভৌমিককে ডিসচার্জ করা হয়েছিল তা লেখা নেই। সাক্ষী বলেন, হ্যা।ঁ পরের প্রশ্ন, রেজিস্টারে সন্তু ভৌমিকের নামের পাশে প্রথমে ৪৯ নম্বর দিয়ে অন্যত্র রেফার করার জন্য লেখা হয়েছিল,পরে তা কেটে ডিসচার্জ লেখা হয়েছিল। ওই কাটাকাটি কে করেছিলেন? সাক্ষী জানান, তিনি করেছিলেন। সে ক্ষেত্রে কেন কোনও স্বাক্ষর করেন নি তা জানতে চাওয়া হলে সাক্ষী বলেন, সব সময় তা করা হয় না। এরপর ওই রাতে সন্তু ভৌমিককে কে ডিসচার্জ করিয়ে নিয়ে যান, প্রশ্ন করা হলে তৃপ্তি দেবী জানান, সুজিত দেওয়ান। কিন্তু সুজিত দেওয়ান কে, সেই প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষী জানান তিনি জানেন না। পরে অবশ্য অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সুজিত দেওয়ান পুলিশ কর্মী।
এরপর আইনজীবী বিষ্ণুপ্রসাদ শীল জানতে চান, সজল ঘোষের ডেথ রেজিস্টারে লেখা হয়েছে তাঁকে ওই দিন ২৩.২৯ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সাক্ষী কোথা থেকে ওই তথ্য পেয়েছিলেন। তৃপ্তি দেবী জানান, জরুরি বিভাগের অ্যাডমিশন রেজিস্টার এবং রোগীর বেডহেড টিকিট থেকে ওই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
শেষে সাক্ষীকে জেরা করেন প্রদীপ সাহার আইনজীবী প্রতিম সিংহ রায়। তিনি জানতে চান ওই রাতে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের মেল ওয়ার্ডে কতজন ভর্তি হয়েছিলেন। সাক্ষী বলেন, খাতা না দেখে তিনি বলতে পারবেন না। প্রতিমবাবু আরও জানতে চান, সেই রাতে হাসপাতালের মেল ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে কতজন নার্স এবং জিডিএ কর্তব্যরত ছিলেন। সাক্ষী জানান, মেল ওয়ার্ডে নার্স হিসাবে তিনি একাই ছিলেন। সঙ্গে একজন জিডিএ কর্মী ছিলেন। তবে অন্য ওয়ার্ডের কথা তিনি জানেন না। এরপরেই এ দিনের মতো শুনানি শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী শুনানি হবে ১৬ এপ্রিল।