কারবার মন্দ চলছিল না। পাশেই কাঁটাতারহীন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হওয়ায় ক্রেতাও কম ছিল না।
কিন্তু, বর্ধমান বিস্ফোরণের পর থেকেই যে পুলিশের বাড়তি নজরদারি! আর তার জেরেই ফাঁস হয়ে গেল কম্পিউটার সেন্টারে জাল ভোটার কার্ড তৈরির চক্র। ধরা পড়লেন ওই সেন্টারের কর্মচারী। মালিক আলাউদ্দিন পলাতক। বুধবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার বিদুপুর এলাকার ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ জলঙ্গির সরকারপাড়া থেকে বহরমপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল আট জন বাংলাদেশি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ জোড়তলা এলাকায় বাস থামিয়ে ওই আট জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছ থেকে চারটি জাল ভোটার কার্ড উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকেই পুলিশ ওই কম্পিউটার সেন্টারের খোঁজ পায়। দু’টি কম্পিউটার, প্রিন্টার, ল্যামিনেটর
এবং বেশ কিছু জাল ভোটার কার্ড বাজেয়াপ্ত করে সেন্টারটি সিল করে দেয় পুলিশ।
ধৃত কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সীমান্তে বেশ কিছু লোককে টাকার লোভ দেখিয়ে কিনে নেওয়া হয় তাঁদের ভোটার কার্ড। সেই কার্ডগুলিকে জলে ভিজিয়ে রেখে আলাদা করে নেওয়া হয় হলোগ্রাম। এর পরে ছবি-সহ অন্য কারও নকল ভোটার কার্ড কম্পিউটারে তৈরি করে সেঁটে দেওয়া হয় আসল হলোগ্রাম। ফলে, আসল-নকলের ফারাক বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলছেন, “নিজের ভোটার কার্ড বিক্রি করে দেওয়া খুবই সহজ। কারণ, ক্রেতাকে বলে দেওয়া হচ্ছে, হলোগ্রাম ছাড়া ওই কার্ডের অন্য কিছুই ব্যবহার করা হবে না ভুয়ো কার্ডে। কার্ড বিক্রি করে নগদ কিছু টাকাও পেয়ে যাচ্ছেন। পরে থানায় ডায়েরি করে তিনি ফের একটি ভোটার কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন।”
ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, “ধৃতদের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী ও কুষ্টিয়া জেলায়। এ দেশে এসে বিদুপুরে ওই কম্পিউটার সেন্টারে জাল ভোটারকার্ড তৈরি করে তারা ভিন্ রাজ্যে কাজে যাচ্ছিল।” এসডিপিও বলেন, “সীমান্ত এলাকায় এই ব্যাপারে এখন লাগাতার অভিযান চলবে।”
একই ভাবে জাল শংসাপত্র তৈরির অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের ভেবিয়া এলাকার এক ছাপাখানা মালিক ওয়াজেদ আলি ও তাঁর কর্মচারী কুতুবুদ্দিন মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে প্রচুর জাল শংসাপত্র, সরকারি আধিকারিকদের সই করা প্যাড উদ্ধার হয়েছে।