বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঘরে ঢুকে এক ছাত্রী ও তার মাকে গুলি করার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মায়ের মৃত্যু হয়। মেয়ে আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ নদিয়ার হাঁসখালিতে ঘটনাটি ঘটে। রাতেই মেয়েটিকে কলকাতায় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে অনেক রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। এসডিপিও (রানাঘাট) আজহার এ তৌসিফ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বরুণ মজুমদার নামে ওই যুবক। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। সে যাতে বাংলাদেশে পালাতে না পারে, তার জন্য বিএসএফ-কে সতর্ক করা হয়েছে।” বরুণের বাড়ির লোকজনেরও খোঁজ নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির বাড়ি হাঁসখালির পিপুলবেড়িয়া গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিল গ্রামেরই যুবক বরুণ মজুমদার। বছরখানেক আগে সে কলকাতা পুলিশের ষষ্ঠ ব্যাটালিয়নে কনস্টেবলের চাকরি পায়। মাস কয়েক আগে কলেজের পথে ছাত্রীটিকে আটকে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বরুণ তাঁকে সিঁদুরও পরিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে ছাত্রীর পরিবারের তরফে হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে বরুণের জামিন হয়ে যায়। ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, “মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিল ওই যুবক। কিন্তু এমন কিছু ঘটাবে, তা কখনও ভাবিনি!” অভিযোগ, দিন দু’য়েক আগে গ্রামে ফিরে বরুণ ফের বিরক্ত করতে শুরু করে। শুক্রবার রাতে ছাত্রীটি বাড়িতে একা ছিল। বরুণ ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ঠিক তখনই মেয়েটির মা ফিরে এসে ভিতরে ধ্বস্তাধস্তির শব্দ পান। চিৎকার করে তিনি প্রতিবেশীদের ডাকতে থাকেন। কৃষ্ণার সম্পর্কিত বৌদি বাসন্তী ঘোষের অভিযোগ, “কাকিমার গলার আওয়াজ পেয়ে বরুণ ভিতর থেকে হুমকি দেয়, বিয়ে না দিলে আজই হেস্তনেস্ত করে যাবে সে। আমরা ছুটে যাওয়ার আগেই সে কৃষ্ণাকে পরপর তিনটে গুলি করে। তার পর দরজা খুলে কাকিমাকেও গুলি করে অন্ধকারে ছুটে পালিয়ে যায়।”
রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা পিস্তল উদ্ধার করে। এসডিপিও বলেন, “সেটি কী ধরনের পিস্তল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”