কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনের জন্য অপূর্ব বিশ্বাসকে প্রার্থী করল সিপিএম। বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে অপূর্ববাবুর নাম ঘোষণা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। পেশায় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ববাবু কৃষ্ণনগরের একটি নার্সিংহোমের মালিক।
অপূর্ববাবু কোনও দিনই সক্রিয় রাজনীতি করেননি। চিকিৎসক মহলে বামপন্থী বলেই এতদিন পরিচিত ছিলেন। এহেন অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী ঘোষণা করায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। কারণ এতদিন সাধারণত চিকিৎসক বা অধ্যাপকদের পিছনে না ছুটে দলের সক্রিয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করাই ছিল সিপিএমের দস্তুর। গত লোকসভা ভোটেও সেই চেনা পথেই হেঁটেছিল দল। এ বার সেই চেনা পথ থেকে সরে এসে অপূর্ববাবুর মতো ব্যক্তিকে প্রার্থী করায় দলের কর্মীদের মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে, “নদিয়ায় কি দল তার এতদিনের অবস্থান বদলে ফেলল?”
শুধু দলের অন্দরেই নয়, প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকেই নানা প্রশ্ন ভাসছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। কারও প্রশ্ন, এটা কি কেবলমাত্র একটা চমক, নাকি দলে ‘উপযুক্ত’ প্রার্থী না পেয়েই এমন সিদ্ধান্ত? আবার কারও জিজ্ঞাসা, সিপিএম কি বাধ্য হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত নিতে, নাকি বিজেপির সঙ্গে ‘পাল্লা’ দেওয়ার জন্য অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের দিকে ঝুঁকতে হল? সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্যের কথায়, “আমাদের দলে কিন্তু এমনটা দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নতুন বইকি। নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসাও বলতে পারেন।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অপূর্ববাবু ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে একাধিক নাম ঘোরাফেরা করছিল। সেই তালিকায় যেমন এক পুরনো প্রার্থীর নাম ছিল, তেমনই ছিল এক যুব নেতার নামও। এ দিন অপূর্ববাবুও জানান, তিনি নিজে প্রার্থী হওয়ার জন্য আগ্রহী ছিলেন না। এমনকী সিপিএমের তরফে তাঁর কাছে প্রস্তাব আসার পরেও তিনি পর্যাপ্ত সময় দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়ে ছিলেন। অপূর্ববাবু বলেন, “সকলের কথা ভেবে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে গেলাম।’’ দলেরই এক কর্মীর কথায়, “অনেক চেষ্টা করেও দলে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনই ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।” জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “কে বলেছেন অপূর্ববাবু অরাজনৈতিক ব্যক্তি? উনি তো আমাদের সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগ রাখতেন। কর্মব্যস্ততার জন্য সক্রিয় ভাবে এতদিন রাজনীতি করতে পারতেন না।’’