চাঁদার জুলুমে তীব্র যানজট বহরমপুরে

বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে চাঁদার জুলুমবাজি চরমে উঠেছে বহরমপুরে। পুজোর এখনও প্রায় মাসখানেক বাকি। কিন্তু বহরমপুর পঞ্চাননতলা রেলগেটের পূর্বপাড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে গত কয়েক দিন ধরে পণ্যবাহী লরি আটকে জোর করে চাঁদা তুলছে শাসকদলের পাশাপাশি সিটু এবং আইএনটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনগুলি। ফলে লরি দাঁড়িয়ে যানজট বাড়ছে ওই রাস্তায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

গাড়ি থামিয়ে চলছে বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা তোলা। বহরমপুরে নিজস্ব চিত্র

বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে চাঁদার জুলুমবাজি চরমে উঠেছে বহরমপুরে।

Advertisement

পুজোর এখনও প্রায় মাসখানেক বাকি। কিন্তু বহরমপুর পঞ্চাননতলা রেলগেটের পূর্বপাড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে গত কয়েক দিন ধরে পণ্যবাহী লরি আটকে জোর করে চাঁদা তুলছে শাসকদলের পাশাপাশি সিটু এবং আইএনটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনগুলি। ফলে লরি দাঁড়িয়ে যানজট বাড়ছে ওই রাস্তায়। তার উপরে এক দিক বন্ধ করে বুধবার সকাল থেকে মধুপুর-বিষ্ণুপুর রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় ওই যানজট তীব্র আকার নিয়েছে। এসডিও সুপ্রিয় দাস বলেন, “চাঁদার জুলুমবাজি কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। ডিএসপি ট্রাফিককে বলছি খোঁজ নিতে।”

এ দিকে, বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চাননতলা মোড় ছাড়িয়ে ৩৪ জাতীয় সড়ক বরাবর চুঁয়াপুর পর্যন্ত এবং বহরমপুর-জলঙ্গি রাজ্য সড়কের কদবেলতলা পর্যন্ত সেই যানজট ছড়িয়ে পড়ছে। একশ্রেণির চালক ট্রাফিকের নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবে গাড়ির লম্বা লাইনের বাইরে বেরিয়ে আগে যেতে গিয়ে যানজট আরও বাড়াচ্ছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী থেকে নিত্যযাত্রীদের। সব মিলিয়ে বহরমপুুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চাননতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় দু’কিমি রাস্তা পার হতে ঘণ্টা দুয়েকের বেশি সময় লাগছে। তার মধ্যে লালগোলা-শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চলাচলের সময়ে পঞ্চাননতলা রেলগেট বন্ধ হলে ওই পথে যাতায়াত করা সাধারণ মানুষের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

চাঁদা তুলছে সকলে। প্রশ্ন করলে অবশ্য একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপাতে ব্যস্ত। আইএনটিইউসি অনুমোদিত মুর্শিদাবাদ জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন সহ-সভাপতি লিয়াকত আলি বলেন, “শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা জোর করে ওই চাঁদা তুলছে। তারা আমাদের কার্যালয়ের সামনে এসে লরি আটকে জোর করে চাঁদা তোলার ফলে সাধারণ মানুষ ভাবছে ওই কাজ আমাদের ইউনিয়নের সদস্যরা করছে। কিন্তু ওই অভিযোগ ঠিক নয়।”

মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল ট্রাক ড্রাইভার অ্যান্ড হেল্পার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক তাপস বিশ্বাস বলেন, “মানুষের অসুবিধে করে আমরা কোনও চাঁদা তুলছি না। সরকারের বদনাম করার জন্য প্রশাসনের একাংশের সহযোগিতায় সিটু এবং আইএনটিইউসি চাঁদা তোলার নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই যানজট তৈরি করছে।” কিছুটা হলেও ওই পুজো উপলক্ষে চাঁদা তোলার কথা অবশ্য মেনে নিচ্ছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “এখন সকলে যদি চাঁদা তোলা বন্ধ করে তাহলে আমরাও মেনে চলব।”

তৃণমূল ও কংগ্রেসের ওই শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় পঞ্চাননতলা রেলগেটের পূর্বপাড়ে পাশাপাশি থাকলেও সিটু অনুমোদিত জনপথ পরিবহণ মজদুর ইউনিয়নের কার্যালয় রয়েছে পশ্চিম পাড়ে। সিটুর জেলা সম্পাদক তুষার দে প্রকারান্তরে পুজো উপলক্ষে চাঁদা তোলার কথা মেনে নেন। তিনি বলেন, “ওই পুজোকে ঘিরে চালক ও খালাসিদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তবে জুলুমবাজি করে চাঁদা তোলা হলে নিশ্চয় অন্যায়। জনস্বার্থ অবশ্যই দেখতে হবে। সেই সঙ্গে যিনি চাঁদা দেবেন, তাঁর আগ্রহ থাকতে হবে।”

অন্যায়টা বুঝছে সকলে। তবুও অন্যায়টা হচ্ছে কেন, সেটাই প্রশ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement