কলেজ চত্বরে দু’পক্ষের বচসা। নিজস্ব চিত্র।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের উপস্থিতি নিয়ে শনিবার দুপুরে বহরমপুর কলেজে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধল। পুলিশ এসে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। দু’পক্ষের মোট ৭ জন আহত হয়েছেন। তবে কোনও পক্ষই অভিযোগও করেনি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
কর্মাস কলেজ নামে পরিচিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কলেজে কয়েক বছর ধরে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল রাজ্যে শাসন ক্ষমতায় আসার আগে এসএফআই-এর সঙ্গে ছাত্র পরিষদের (সিপি) সংঘর্ষ লেগেই থাকত। রাজ্যে পালা বদলের পর সিপি-র সঙ্গে নিয়মিত সংঘর্ষ বাধছে টিএমসিপি-র।
শুক্রবার কলেজে ছিল নবীনবরণ অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার, স্থানীয় বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী-সহ কংগ্রেসের এক দল নেতানেত্রী। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি রাজা ঘোষের অভিযোগ, “কলেজের অনুষ্ঠানকে কংগ্রেসের দলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। শনিবারও ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্রসংসদ বহিরাগতদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে। তার প্রতিবাদ করাতেই ছাত্র পরিষদের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপর চড়াও হয়। পুলিশও ছাত্র পরিষদের পক্ষ নিয়ে আমাদের ছেলেদের লাঠিপেটা করে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র পরিষদের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সরফরাজ রুবেলের অভিযোগ, “শাসকদল ও পুলিশ-প্রশাসনের ক্ষমতা প্রয়োগ করেও ছাত্রসংসদ দখল করতে পারছে না টিএমসিপি। তাই যে কোনও অজুহাত তুলে কলেজে অশান্তি বাধাচ্ছে ওরা। এ দিনও সুষ্ঠু পরিবেশকে অশান্ত করতে বহিরাগতের ছুতো তুলে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’
পুলিশ কলেজ গেটের বাইরে লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেনি। তবে, লাঠিচার্জে পক্ষপাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।
কলেজ অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল ‘জেলার বাইরে’ আছেন বলে এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। ভারপ্রাপ্ত অধাপক শান্তনু ভাদুড়ি কলেজ অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের উপস্থিতির অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ঘটনার সময় মঞ্চের মাইক থেকে বহিরাগতদের চলে যেতে অনুরোধ করি। আমার কথা মেনে নিলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। বড় কোনও গোলমাল হয়নি।” দুপুর আড়াইটেয় ওই ঘটনার পর ফের সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে।