সইদুলের শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
গণপ্রহারে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। নওদার রায়পুর এলাকার ঘটনা। মৃত ব্যক্তির নাম সইদুল শেখ (৪০)। তাঁর বাড়ি নওদার কানাপাড়া গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে রায়পুর এলাকায় একটি বাড়িতে যায় সে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, চুরি করতেই গিয়েছিল সে। ওই বাড়িতে রবিবার ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান এবং সোমবার ছিল বৌভাত। ফলে বেশি রাত অবধি বাড়ির অধিকাংশ লোকজন জেগেই ছিলেন। গভীর রাতে বাড়িতে চোর ঢুকেছে সন্দেহ হতেই চিৎকার শুরু করে বাড়ির লোকজন। জেগে যায় অন্য প্রতিবেশীরাও। পালানোর সময় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সইদুলকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। এরপর শুরু হয় গণপ্রহার। খবর পৌঁছয় নওদা থানাতেও। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে পুলিশ। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। তেমন কোনও কাজ করতেন না। আগেও দু’এক বার চোর অপবাদ উঠেছিল তার নামে। তাই বলে এ ভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনা মানতে পারছেন না অনেকেই। গ্রামের বাসিন্দা সাফাজুদ্দিন মণ্ডল বলছেন, ‘‘দেশে তো আইন কানুন আছে। তাই বলে চুরির শাস্তি পিটিয়ে খুন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। এ কী করছি আমরা?’’ মৃতের স্ত্রী চম্পা বিবি বলেন, ‘‘চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে, ওকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারত। তাই বলে লোকে পিটিয়ে মেরে দিল। আমাদের কি হবে?’’ ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার জানিয়েছেন, ‘‘একটি খুনের মামলা রুজু হয়েছে। কারা মারধর করেছে তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।’’