—প্রতীকী চিত্র।
ট্রেড লাইসেন্সের ফি, বাড়ি-ঘরের কর থেকে নিজস্ব তহবিল তৈরি হত গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির। সেই তহবিলের সিংহভাগ টাকা আসত ট্রেড লাইসেন্সের ফি থেকে। বছর দুয়েক থেকে অনলাইনে সরাসরি রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে ট্রেড লাইসেন্সের ফি জমা পড়ছে। যার জেরে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিগুলি বিপদে পড়েছে। নিজস্ব তহবিলের হাল এতটাই খারাপ যে বৈঠকের টিফিন বা চায়ের খরচের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে। সম্প্রতি বহরমপুরে এক বৈঠকে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিলের দফারফা হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি মির আলমগির পলাশ। তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, এটা স্থানীয় সিদ্ধান্ত নয়। সেই সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স বাবদ সংগৃহীত ফি রাজ্য থেকে নির্দিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতে ফেরত আসে।
মির আলমগির পলাশ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধি হত ট্রেড লাইসেন্স বা হাট-বাজারের করে। সেটা কিন্তু বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিভিন্ন ট্রেড লাইসেন্সের ফি এবং হাট বাজারের কর জমা হত। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স ফি সহ অন্য কর দেওয়ার সুযোগ হয়েছে। ফলে সে সব কর পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিগুলি পাচ্ছে না। যার ফলে নিজস্ব তহবিলের যে বৃদ্ধি হত, এখন তা হচ্ছে না। আজকে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল প্রায় শূন্য। ফলে নিজস্ব কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না পেরে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলি বিপদে। গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিগুলি যাতে তাদের নিজস্ব তহবিল বাড়াতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হোক।’’
বুধবার বহরমপুরের বিজেপি পরিচালিত হাতিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণ মাঝি বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্সের ফি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির নিজস্ব তহবিলের অন্যতম উৎস ছিল। কিন্তু বছর দুয়েক থেকে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের ফি সরাসরি সরকারের ঘরে জমা পড়ে। যার জেরে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের অর্থ কমে গিয়েছে। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত চালাতে গিয়ে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত ট্রেড লাইলেন্সের ফি থেকে বছরে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিজস্ব তহবিলে আসত। বাড়ি ঘরের কর, বাড়ির পরিকল্পনা, বিভিন্ন প্রকল্পের এনওসি-র ফি বাবদ বছরে লাখ খানেক টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে জমা পড়ত। কিন্তু অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের ফি দেওয়া শুরু হওয়ার পর থেকে সেই টাকা আর পাচ্ছি না। আবার রাজ্য থেকে ট্রেড লাইসেন্সের করের ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতে ফিরে আসে কি না, এখনও বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তাই ঘরবাড়ির কর এবং বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা কিংবা বিভিন্ন প্রকল্পের এনওসি থেকে যে সামান্য কর আসছে তাতে পঞ্চায়েতের চা টিফিনের খরচ জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।’’