Relationship

চার বছরের প্রেম, পালিয়ে বিয়ে, স্বামীর সঙ্গে বৌদির ঘনিষ্ঠ ছবি দেখে নিজেকে শেষ করলেন তরুণী!

বিয়ের মেয়াদ এক সপ্তাহেরও কম। প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তার পরই তরুণী জানতে পারেন বৌদির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে স্বামীর। এর পর অ্যাসিড খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১০:৩০
Share:

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক জেনে ফেলার পর অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন তরুণী। —প্রতীকী চিত্র।

গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি দু’জনের। স্কুল, টিউশন থেকে শুরু করে বাজার যাওয়ার পথে রোজ দু’বেলা দেখা। সেখান থেকেই প্রেমপর্বের শুরু। তরুণ-তরুণীর চার বছরের প্রেম। কিন্তু হঠাৎই প্রেমিকার বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। তাই প্রেমিকের সঙ্গে পরামর্শ করে গত ১২ মার্চ টিউশন পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাড়ির লোক খোঁজাখুঁজির পর পরিবার জানতে পারে বিষ্ণুপুর দে পাড়ার এক তরুণকে বিয়ে করেছে ওই তরুণী। কিন্তু বিয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে রহস্যমৃত্যু তরুণীর। শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছে বধূ। যদিও তরুণীর পরিবারের অভিযোগ ভিন্ন। তাদের দাবি, স্বামীর সঙ্গে বৌদির ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি মোবাইলে দেখে ফেলেছিলেন মেয়ে। সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই আত্মহত্যা করেছেন সুদীপা মণ্ডল নামে ওই তরুণী। তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা গৌতম মণ্ডলের তিন মেয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠা সুদীপা। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ৪ বছর ধরে বাপ্পা মুখোপাধ্যায় নামে স্থানীয় যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। তরুণীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, সুন্দরী সুদীপা উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজে যাক, এমনটা কখনও চাননি বাপ্পা। তাঁর ভয় ছিল ভালোবাসার মানুষকে হারানোর। এমনকি, বাপ্পার জেদে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাই দেওয়া হয়নি সুদীপার। অন্য দিকে ছেলে বেকার হওয়ায় জামাই হিসেবে তাকে মেনে নিতে কিঞ্চিৎ আপত্তি ছিল সুদীপার পরিবারেরও। যদিও পরে মেয়ের বিয়ে মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা।

সুদীপার আত্মীয় সুদেষ্ণার দাবি, ‘‘জামাইয়ের (বাপ্পা) মোবাইলে ওর এক বৌদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিছু ছবি দেখে ফেলে দেখে সুদীপা। সে নিয়ে অশান্তি হয়। বিয়ের পর দিন, ১৩ মার্চই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে এ জন্য বাপের বাড়ি চলে আসে সুদীপা। তবে বাপ্পা ওর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখত।’’ মৃতার জামাইবাবু প্রসেনজিৎ প্রামাণিকের অভিযোগ, ‘‘গত ১৬ মার্চ সকাল ৬টা নাগাদ ভিডিয়ো কলে বাপ্পার সঙ্গে কথা বলছিল সুদীপা। ওদের ঝামেলা হয়। সুদীপাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয় বাপ্পা। এর পর শৌচাগারে রাখা নাইট্রিক অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে সুদীপা।’’

Advertisement

সুদীপাকে উদ্ধার করে শক্তিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু কলকাতায় যাওয়ার পথে চাকদহে মৃত্যু হয় তাঁর। সুদীপার মা অর্চনা মণ্ডলের কথায়, ‘‘শেষ অবস্থাতেও মেয়ে বার বার বাপ্পার কথা বলেছে। ওকে একবার দেখতে চেয়েছে। তবুও ও আসেনি।’’

ইতিমধ্যে এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সব পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement