এই স্কুলেই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের জন্মলগ্ন থেকে ইংরেজি এবং ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক নেই। গত ১৫ বছর ধরে অঙ্ক শেখানোর শিক্ষক নেই। অশিক্ষক কর্মীও নেই। যে স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন, সেই স্কুলের হাল দেখতে গিয়ে হতবাক ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি।
হুগলির ফুরফুরার রামপাড়ায় অবস্থিত নারায়ণী বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলের প্রাথমিক বিভাগটি অবশ্য ‘কো-এড’। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী উভয়েই পড়াশোনা করে। এই স্কুলেই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদও। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ হঠাৎই ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নওশাদ। তিনি স্কুলের নানা সমস্যার কথা শোনেন প্রধানশিক্ষিকার কাছে। সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দেন তবে যে পরিস্থিতি দেখলেন, তাতে বিস্মিত তিনি। বিধায়ক জানতে পারেন গত কুড়ি বছর ধরে ওই স্কুলে কোনও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নেই। জাঙ্গিপাড়ার ফুরফুরা পঞ্চায়েত এলাকার ওই স্কুলটিতে ২০১৪ সালের আগে পর্যন্তও পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৬০০-র বেশি। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তার পরেই কমতে থাকে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা। এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ৪৫২ জন। আর শিক্ষিকা মাত্র ৮ জন।
বিধায়ক জানতে পারেন স্কুলে অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান এবং ইংরেজির শিক্ষক নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওই সব বিষয়গুলি পড়ান অন্য বিষয়ের শিক্ষিকারা। গত বছর ওই স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছে ৮২ জন ছাত্রী। তার মধ্যে অকৃতকার্য হয় ২৫ জন। স্বভাবতই সব দায় এসে পড়েছে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার উপরে। এমনকি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কাজও তাঁকেই করতে হয় বলে জানান প্রধানশিক্ষিকা মৃদুলা হালদার। তাঁর অভিযোগ, বারবার এসআই, ডিআই-সহ শিক্ষা দফতরে আবেদন জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
যদিও এ বিষয়ে জাঙ্গিপাড়া ব্লকের স্কুল পরিদর্শক দীপঙ্কর সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নারায়ণী বালিকা বিদ্যালয়ে যথেষ্ট শিক্ষক আছেন। শুধু গ্রুপ ডি কর্মী নেই।’’
প্রধানশিক্ষিকা বলেন, ‘‘বিধায়ক স্কুলে আসায় আমি অত্যন্ত খুশি। বিধায়ক নিজে এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। তিনি এখনও যে স্কুলকে মনে রেখেছেন, এটা ভাল লাগল।’’ প্রধানশিক্ষিকা আরও বলেন, ‘‘আমরা কোথায় কোথায় অভিযোগ জানিয়েছি, সেটা উনি জানতে চাইলেন। বললেন চেষ্টা করবেন স্কুলের হাল ফেরাতে।’’