স্বপ্না বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
নাবালক ছেলের সামনেই এক সরকারি নার্সকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।
নিহত মহিলার নাম স্বপ্না বিশ্বাস(৩২)। তিনি কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে স্টাফ নার্স হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণগঞ্জের শ্যামনগর এলাকায়। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী অভিযুক্ত জয়দেব বিশ্বাস পলাতক। স্বপ্নাদেবীর বাপের বাড়ির তরফে জয়দেববাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত জয়দেব তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাকে বেশ কিছু দিন ধরেই সন্দেহ করতেন। এক যুবকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখা নিয়ে প্রায়ই দু’জনের মধ্যে অশান্তি হত। সেটাই খুনের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রায় সতেরো বছর আগে স্বপ্না ও জয়দেবের বিয়ে হয়। জয়দেববাবুর স্বর্ণখালি বাজারে একটি দোকান আছে। তাঁদের একমাত্র ছেলের বয়স দশ বছর। সম্প্রতি এক যুবকের সঙ্গে স্বপ্নাদেবীর যোগাযোগকে কেন্দ্র করে দু’জনের আশান্তি হত। আত্মীয়রা এসে তাঁদের ঝগড়়া থামিয়েছেন কয়েক বার। তা-ও আশান্তি চরমে ওঠে। ঘটনায় প্রত্যদর্শী তাঁদের ছেলে অর্ণব পুলিশকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে জয়দেববাবু বাড়ি ফিরলে দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়়া হয়। সেই সময় আচমকা জয়দেববাবু রিভলবার বের করে স্বপ্নাদেবীকে গুলি করেন। গুলির শব্দ ও স্বপ্নাদেবীর চিৎকারে আশপাশের লোকেরা ছুটে আসেন। তাঁরাই রক্তাক্ত স্বপ্নাদেবীকে অটো করে প্রথমে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। জেলা হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
চোখের সামনে বাবার হাতে মা-কে গুলি খেতে দেখার পর থেকে আতঙ্কের মধ্যে আছে ছেলে অর্ণব। আপাতত সে মামার বাড়িতে রয়েছে। খানিকটা ঘোরের মধ্যে সে বলে, “গুলি খাওয়ার পরও মা কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। তার পর বসে পড়ে। আবার কোনও মতে উঠে দাঁড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে চিৎকার করে সবাইকে ডাকে। বাবা তার মধ্যে ছুটে পালিয়ে যায়।”