—প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ চিকিৎসার পরেও সুস্থ হননি বাড়ির এক মহিলা সদস্য। ওঝা নিদান দিয়েছেন, ‘‘ভূতে ধরেছে ওই মহিলাকে। ভূত তাড়াতে মুখে জুতো দিয়ে ঘোরাতে হবে প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ।’’ ওঝার নির্দেশ মতো ভূত তাড়ানোর নামে বহরমপুর শহরে এক মহিলাকে জুতো মুখে প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটানোর অভিযোগ উঠল তাঁরই পরিবারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে বহরমপুর থানার অন্তর্গত চুয়াপুর সুকান্তপল্লিতে। এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। দুই সন্তানের মা ওই মহিলাকে বহরমপুর শহর এবং তার আশেপাশের এলাকায় একাধিক ডাক্তার দেখানো হলেও তাঁর মানসিক কিছু সমস্যা থেকে যায় বলে পরিবারের দাবি। তাদের আরও অভিযোগ, ওই মহিলা মাঝে মাঝেই অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। শুক্রবার বহরমপুর শহরে দেখা যায়, এক মহিলা চামড়ার জুতো মুখে নিয়ে রাস্তা দিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন। পিছনে তাঁর বাড়ির লোকেরা চিৎকার করতে করতে চলেছেন। এই দৃশ্য দেখার পরেই কয়েক জন বহরমপুর থানায় খবর দেন। পুলিশ কেএন কলেজের ঘাটের কাছে ওই মহিলাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে। সবটা শুনে চিকিৎসার জন্য তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয় পরিবারের লোকজনকে।
ওই মহিলার পরিবারের সদস্যদের দাবি, বহরমপুর শহরের কয়েক জন নামী চিকিৎসককে দেখানোর পরেও তিনি সুস্থ না হওয়ায় সম্প্রতি হাতা কলোনি এলাকায় এক কবিরাজের শরণাপন্ন হন তাঁরা। সেই কবিরাজ জানিয়েছিলেন, মহিলার শরীরে একটি ভূত বাসা বেঁধেছে। ওই কবিরাজই নিদান দিয়েছিলেন, জুতো মুখে রাস্তা দিয়ে হাঁটলে তাঁর যাবতীয় শারীরিক সমস্যা চলে যাবে। ভূতও বিতাড়িত হবে।
পরিবারের সদস্যদের আরও দাবি, বর্তমানে ওই কবিরাজ ছাড়া আর কারও কথা মহিলা শোনেন না। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, কবিরাজের কথা মতো জুতো মুখে শহর ঘোরালেই ভূত ছেড়ে যাবে। সেই বিশ্বাস থেকেই তাঁরা ওই মহিলাকে জুতো মুখে নিয়ে রাস্তা ঘোরাচ্ছিলেন। তবে পুলিশি হস্তক্ষেপে ‘ভূত তাড়ানো’র প্রক্রিয়া আর শেষ হয়নি।