প্রতীকী ছবি।
অন্ধকার নামলেই অচেনা মুখের ভিড় জমতে শুরু করে বাড়িতে। রাত গভীর হলে ঘনঘন গাড়ির শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসীরা। নদিয়ার চাপড়ার সেই বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হল আট কেজিরও বেশি গাঁজা। গাঁজা পাচারের অভিযোগে এক বধূ-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে দক্ষিণবঙ্গে গাঁজা পাচারের অন্যতম ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’ হল ‘আপাত-নিরীহ’ ওই বধূর এক কামরার ঘর!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসে উত্তরবঙ্গ থেকে নবদ্বীপ হয়ে বারাসত নিয়ে যাওয়ার সময় গাঁজাসমেত পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই চাপ়ড়ার মধ্যবয়সি পল্লবী দাসের সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এর পর তদন্ত যত এগিয়েছে, উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে মালদহ হয়ে চাপড়ার পল্লবীর কাছে গাঁজা পৌঁছত। পরে সেখান থেকে তা ছড়িয়ে পড়ত বাংলার পাইকারি কারবারিদের হাতে। এর পরেই শনিবার গভীর রাতে পল্লবীর বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। ভোরের দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁকে এবং তাঁর আরও তিন সহযোগী যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তিন ধৃত যুবকের মধ্যে এক জন চাপড়ারই বাসিন্দা, দেবু সর্দার। বাকি দু’জন— সুজয় সরকার এবং সুবল মজুমদার কোচবিহারের বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, সুজয় এবং সুবল উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে গাঁজা নিয়ে আসতেন। সেই গাঁজা পাইকারী কারবারিদের কাছে পৌঁছে দিতেন পল্লবী এবং দেবু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাপড়া থানা এলাকায় দইয়ের বাজারের বাড়িতে একাই থাকতেন পল্লবী। কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। তার পরেই স্থানীয় এক মাদক কারবারির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পল্লবী। কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সুপার ঈশানী পাল বলেন, ‘‘চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য সংগ্রেহর চেষ্টা হচ্ছে।’’