তৃণমূলের আইটিসেলের জবাবে সিপিএমের ডিজিটীল সামিট। প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুথ স্তরে জনসংযোগের পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে প্রচারের উপর জোর দিচ্ছে সিপিএম। এক দিকে যেমন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ায় পাড়ায় সান্ধ্যকালীন বৈঠক করছে তারা, অন্য দিকে সমাজমাধ্যমে প্রচারকে আরও শক্তিশালী ও সংগঠিত করতে ‘ডিজিটাল সামিট’-এর আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে জেলার প্রতিটি এরিয়া কমিটি থেকে পাঁচ জন করে সদস্যদের নিয়ে এসে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে হলে সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে বেশ কিছু দিন ধরেই প্রতি সন্ধ্যায় বুথ স্তরে পাড়ায়-পাডায় বৈঠক করছেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। এই কর্মসূচিকে তাঁরা বলছেন ‘সান্ধ্যকালীন পাড়া বৈঠক’। এই সমস্ত বৈঠক স্থানীয় শাখা কমিটি থেকে আয়োজন করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি এরিয়া ও জেলা কমিটির সদস্যেরা উপস্থিত থাকছেন। থাকছেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরাও। সেই সমস্ত বৈঠকে তৃণমূলের দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্য ‘গোপন আঁতাঁত’ আছে বলেও তথ্য ও যুক্তি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে। স্থানীয় স্তরের নেতাদের দুর্নীতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যর্থতার দিকগুলিও তুলে ধরা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত পরামর্শও চাওয়া হচ্ছে।
কিন্তু শুধু বুথ স্তরে নিবিড় জনসংযোগ করলেই যে চলবে না সেটাও উপলব্ধি করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। বিশেষ করে বিজেপি ও তৃণমূলের ‘আইটি সেল’ যে ভাবে সমাজমাধ্যমে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, সে ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা মানে জনমত তৈরির ক্ষেত্রেও যে পিছিয়ে থাকতে হবে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন নেতারা। সেই কারণে তাঁরা কর্মীদেরও বেশি করে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় করার পরিকল্পনা করেছেন। তার জন্য একাধিক রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে।
আগামী ৯ এপ্রিল কৃষ্ণনগরের একটি বিএড কলেজে ‘ডিজিটাল সামিট’ এর আয়োজন করা হয়েছে। তার জন্য প্রতিটি এরিয়া কমিটি থেকে পাঁচ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও প্রতিটি এরিয়া স্তরেই ডিজিটাল মাধ্যমে দলের কর্মসূচি, মতদার্শগত প্রচারের পাশাপাশি বিরোধীদের ‘অপপ্রচারের’ পাল্টা দেওয়ার জন্য কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ আরও সংগঠিত ও সক্রিয় ভাবে করার জন্য এই ‘সামিট’ আয়োজন করা হয়েছে। সেখানো ভিডিয়ো তৈরির পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে পোস্টার তৈরি করার নানা বিষয় শেখানো হবে।
সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “আমাদের প্রধান চেষ্টা হল সরাসরি মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়ে তাদের কথা শোনা, তাদের পরামর্শ নেওয়া। পাশাপাশি, সমাজমাধ্যমে তৃণমূল ও বিজেপির অপপ্রচারের পাল্টা প্রকৃত তথ্য বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা।”