সামাজিক দূরত্ববিধির বালাই না রেখেই সরকারি বাসেই উপচে পড়ল ভিড়। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেও বুধবার মুর্শিদাবাদ জেলায় বেসরকারি বাসের চাকা গড়াল না। আর তার জন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নাকাল হতে হল বাস যাত্রীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খেল এনবিএসটিসি। এর মধ্যে আজ, বৃহস্পতিবারও বেসরকারি বাস না চালানোর সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন বাস মালিকরা।
সামাজিক দূরত্ব বিধি শিকেয় তুলে ভিড়ে ঠাসা উত্তরবঙ্গ বাস পরিবহণ নিগমের বাস জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তো বটেই কলকাতা, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি রুটেও গেল বহরমপুর ডিপো থেকে। তবে তা সংখ্যায় অল্প। ওই সরকারি সংস্থা সূত্রে জানা যায়, কলকাতায় বাস চালানোর জন্য জেলা থেকে প্রায় দু’শো বাস তুলে নিয়েছে সরকার। ফলে বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে জেলায়। কর্মীসংখ্যাও কম থাকায় সব দিক সামাল দিতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে ওই সংস্থাকে। ওই সংস্থার ডিপো ইনচার্জ সজল কানুনগো বলেন, “তা সত্ত্বেও হাতে গোনা কর্মী নিয়ে আট থেকে দশটা বাস জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেছে। এ ছাড়া বহরমপুর থেকে রায়গঞ্জ, কলকাতা, শিলিগুড়ি, বর্ধমান রুটেও বাস চলাচল করেছে।” তবে তা যে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল সে কথা অবশ্য মেনে নিয়েছেন ডিপো ইনচার্জ।
সরকারি ছুটি থাকলেও বুধবার জেলায় বেসরকারি বাস চলাচল না করায় ভিড় উপচে পড়ে। ভিন্ রাজ্যে কাজ করেন এমন অনেকেই এখন ফিরে যাচ্ছেন। তাঁদের ভিড় ভাঙে উত্তরবঙ্গ বাস টার্মিনাসে। সেই ভিড় থেকে এক সময় নির্ধারিত বাস ভাড়ার তুলনায় বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তরবঙ্গ বাস পরিবহণ সংস্থার বিরুদ্ধে। অল্প কিছুক্ষণের জন্য হলেও বিক্ষোভ দেখাতেও শুরু করেন তাঁরা। তাঁদেরই একজন গৌরাঙ্গ সাহা বলেন, “বহরমপুর থেকে কলকাতার বাস ভাড়া ১৬০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে।” যদিও তা অস্বীকার করেছেন ডিপো কর্তৃপক্ষ।
এদিন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেকার অটো পথে নামে যাত্রী পরিবহণের স্বার্থে। সরকারি অফিস আদালত ছুটি থাকায় বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার বাসযাত্রীর সংখ্যা স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে। আজও বেসরকারি বাস না চলায় যাত্রী দূর্ভোগও বাড়বে।
সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “বাস পরিষেবা চালু রাখতে অনুরোধ করেছি। মালিক সংগঠনও ন্যূনতম বাস চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” তবে জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে কবে থেকে বাস চলবে সে বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর দিকেই তাকিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব। ওই সংগঠনের সম্পাদক তপন অধিকারী জানান, “বৃহস্পতিবারের পরে অচল অবস্থা সচল হবে কি না, সে বিষয়ে রাজ্য স্তরের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আমরা আজ মালিক বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেব।”
তবে এ দিন ভোরে কিছু বাস চলেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক তপন অধিকারী বলেন, ‘‘লুকিয়ে চুরিয়ে বাস চলতেই পারে তবে বিষয়টা আমাদের জানা নেই।’’