প্রতীকী ছবি।
নতুন করে শুরু হওয়া লকডাউন পর্বে অনেকটাই নিশ্চিন্তে ছিল নবদ্বীপ। জেলার কনটেনমেন্ট জ়োনের তালিকায় এ শহরের নাম ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলায় নবদ্বীপ শহরেও চালু হল কনটেনমেন্ট জ়োন। যদিও তা নিয়ে আমজনতার এখনও কোনও হেলদোল নেই।
গত ২৬ জুনের পর টানা কয়েক দিন শহরে সংক্রমণের কোনও খবর ছিল না। এর পর ১১ জুলাই নবদ্বীপের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতাপনগর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় এক মহিলার করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। রবিবার রাতে আক্রান্ত ওই মহিলাকে কল্যাণীতে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগিণী নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মীর স্ত্রী। সম্প্রতি তিনি চিকিৎসার জন্য কলকাতা গিয়েছিলেন। সেখানেই এক বেসরকারি সংস্থায় ওই মহিলার লালারস পরীক্ষা করা হয়। সোমবার এলাকাটি ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ হিসাবে চিহ্নিত করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এলাকাটি স্যানিটাইজ় করে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। ওই কনটেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে ১২টি পরিবারের মোট ৪৬ জন বাসিন্দা আছেন। আগামী ১৪ দিনের জন্য তাঁদের জ়োনের বাইরে বেরনো নিষিদ্ধ। তাঁদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ, পুরসভা বা কোনও স্বীকৃত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের।
নদিয়ায় করোনা
৩৬২
(মোট আক্রান্ত)
জেলায় চিকিৎসা ৩১৬
চিকিৎসাধীন ৬৫
সুস্থ ২৪৮
মৃত ৩
নতুন রোগী ৩
তেহট্ট-২ ব্লকে এক জন, গয়েশপুর পুরসভা এলাকায় এক জন, নবদ্বীপ পুরসভা এলাকায় এক জন।
নজরে পুরসভা (মোট আক্রান্ত)
কৃষ্ণনগর ৩
কল্যাণী ২৩
শান্তিপুর ৯
নবদ্বীপ ৭
রানাঘাট ৯
চাকদহ ৬
হরিণঘাটা ২৩
*সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে
নবদ্বীপে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন শহর লাগোয়া বাবলারি পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুরের এক মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক। নবদ্বীপ পুরসভা এলাকায় প্রথম আক্রান্ত হন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তেঘরিপাড়া ষষ্ঠীতলার এক বাসিন্দা। ৭ জুন নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুরের বাসিন্দা এক সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের করোনা ধরা পড়ে। করোনা ধরা পড়ে নবদ্বীপ ব্লকের ফকিরডাঙা-ঘোলাপাড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা, মহারাষ্ট্র ফেরত এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও। ১৭ জুন বাবলারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষনগরে এক দিনে তিন মাসের এক শিশু-সহ পাঁচ জনের করোনা ধরা পরে। এর মধ্যে চার জন একই পরিবারের, দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন। অন্য জনের বাড়ি ১ নম্বর ওয়ার্ডের আচার্যপাড়ায়। সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। ২০ জুন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগানের বাসিন্দা, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ফেরা এক পরিযায়ী শ্রমিক এবং ঝাঁপানতলার এক মহিলার করোনা ধরা পড়ে। এখনও পর্যন্ত নবদ্বীপ শহর এলাকায় মোট ন’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে চার জন পরিযায়ী শ্রমিক এবং বাকি পাঁচ জন কলকাতা যোগে সংক্রমিত।
তবে এর পরেও নবদ্বীপের এক শ্রেণির মানুষের বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে শঙ্কিত চিকিৎসক থেকে প্রশাসনিক মহল। মাস্ক ছাড়া চলাফেরা থেকে শুরু করে অহেতুক রাস্তায় বেরনো, ভিড় জমিয়ে আড্ডা মারা, কিছুরই কমতি নেই শহরে। তবে সোমবার থেকে মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছেন নবদ্বীপ নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্যেরা।