নিজস্ব চিত্র
বিভিন্ন এলাকায় যেমন লকডাউনকে আমল না-দিয়ে নিয়ম ভাঙছেন বহু মানুষ, ঠিক তার বিপরীত ছবি দেখা গেল নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে। প্রশাসন-নির্দেশিত নিয়ম পালনে যাতে কোনও ত্রুটি না-থাকে তার দায়িত্ব এখানে কাঁধে তুলে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। লকডাউনের বিধি মানতে তাঁরা নিজেরাই বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে গ্রামগুলিকে বাইরের এলাকার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন।
নবদ্বীপ-ঘাট থেকে কৃষ্ণনগর যাওয়ার রাজ্য সড়কের পাশে পর-পর রয়েছে চর স্বরূপগঞ্জ, বিপ্রনগর, মুজফ্ফরনগর, লেনিন কলোনি, কানাইনগর। গ্রামগুলিকে যুক্ত করেছে যে রাস্তা তাতে আড়াআড়ি বাঁশের ব্যারিকেড দিয়েছেন এলাকার মানুষ। শুরুটা হয়েছিল চর-স্বরূপগঞ্জ থেকে। লকডাউন ঘোষণার পরেও সেখানে রাস্তাঘাটে গিজগিজে ভিড় ছিল। স্বরূপগঞ্জ পঞ্চায়েতের ১৭৬ নম্বর বুথের সদস্য এবং ওই এলাকার বাসিন্দা নির্মল ভৌমিকের কথায়, “পরিস্থিতি দেখে আমরা ঠিক করি, গ্রাম থেকে বাইরে আসা-যাওয়া বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আমরা কেউ গ্রামের বাইরে বেরোবো না।” গ্রামের মূল রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড করে যাতায়াতের পথ আটকে দেওয়া হয়। চর স্বরূপগঞ্জের দেখাদেখি পাশাপাশি সব গ্রাম ব্যারিকেডের পিছনে নিজেদের বন্দি করে ফেলে।
মুজফ্ফরনগরের বাসিন্দা যুবক চিরঞ্জিত দেবনাথ বলেন, “আমাদের গ্রামগুলির ভিতরে রাস্তা দিয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়া যায়। সেটা বন্ধ করা দরকার ছিল। করোনা সংক্রমণের এই সময়ে গ্রামের ভিতর অবাঞ্ছিত লোক ও গাড়ির চলাচল ঠেকাতে প্রথমে আমরা দড়ি ফেলে পথ আটকেছিলাম। দেখলাম তাতেও অনেকে মানছেন না, তখন বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়।”
স্বরূপগঞ্জের প্রধান সিরাজুল শেখ বলেন, “আমি থাকি মহেশগঞ্জে। সেখানেও রাস্তার এক দিকে ব্যারিকেড করা হয়েছে অবাঞ্ছিত প্রবেশ এড়াতে। আমাদের এলাকার মানুষ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে লকডাউন মানছেন। নিজেরা সচেতন না হলে লকডাউনের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’’ বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে ওই পঞ্চায়েতের প্রতিটি বুথ থেকে দু’জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়, যাঁদের কাজ গ্রামের মানুষকে ঘরে থাকার গুরুত্ব বোঝানো। নবদ্বীপের বিডিও বরুণাশিস সরকারের কথায়, “ ওইসব এলাকায় আমি নিজে ঘুরে দেখছি, এলাকার মানুষ যথেষ্ট সচেতন। যদিও ব্যারিকেড থাকায় কোথাও কোথাও নজরদারি চালানোর জন্য পুলিশের গাড়ি ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে ওই সব গ্রামে এলাকার মানুষ ঘরেই আছেন।”