—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রের একশো দিনের প্রকল্পের পাল্টা বছরে ৫০ দিনের কাজের সংস্থানের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। বস্তত গত বছরই জব কার্ড থাকা শ্রমিকদের ‘বিকল্প’ কাজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো জেলা প্রশাসনের তরফে কাজ দেওয়া শুরুও হয়।
বছরে অন্তত ৫০ দিন কাজ বা ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প সেই ‘বিকল্প’ কাজেরই সুনির্দিষ্ট রূপ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। গত বছর থেকেই বিভিন্ন দফতরের কাজে জব কার্ড থাকা শ্রমিকদের যুক্ত করা শুরু হয়। পূর্ত দফতর, সেচ, মৎস্য, পঞ্চায়েত, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরির মতো প্রায় সমস্ত দফতরই বাধ্যতামূলক ভাবে জব কার্ড থাকা অদক্ষ শ্রমিকদের কাজ দিতে শুরু করে।
যদিও তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্নও উঠেছে। অনেকের অভিযোগ, প্রকৃত জব কার্ড থাকা শ্রমিকেরা কাজ পচ্ছেন না, বরং তাদের জব কার্ড ব্যবহার করে দক্ষ শ্রমিকদের কাজে লাগাতে বাধ্য হচ্ছেন ঠিকাদাররা। কারণ পিচের রাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের নির্মান কাজ দক্ষ শ্রমিদের দিয়েই করাতে হয়। অদক্ষ শ্রমিকদের পক্ষে সেই কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে প্রকৃত অর্থে কত জব কার্ড থাকা শ্রমিক পাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ফলে, প্রশ্ন থাকছে ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়েও।
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে এ রাজ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আসা বন্ধ হয়েছে। তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য পারস্পরিক দোষারোপও চলছে। এরই মধ্যে ২০২২ সালের ৩১ নভেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব জবকার্ড হোল্ডারদের অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে বিভিন্ন দফতরের কাজে যুক্ত করার নির্দেশ দেন।
নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ১৪ মাসে ৮ লক্ষ ৫৪ হাজার ৮৫৩ জন জব কার্ড থাকা শ্রমিককে গড়ে প্রায় ৪৭ দিন করে কাজ দেওয়া হয়েছে। এই তথ্য সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলেও রাজ্য জব কার্ড থাকা শ্রমিকদের অনেকটা কাজ দিতে সক্ষম হয়েছে। আগামী দিনে কাজের গতি আরও বাড়বে বলেও তারা মনে করছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম দিকে সমস্ত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। বর্তমানে তা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। যদিও এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কত দিন একশো দিনের প্রকল্পের বিকল্প কাজ দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে কর্তাদেরই কেউ কেউ সংশয়ী। তাঁদের মতে, এত দিন বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করে বিকল্প কাজ দেওয়া গেলেও এ বার হয়তো নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ দেওয়া হবে। তা না পাওয়া পর্যন্ত পুরো চিত্র পরিষ্কার হবে না।
নদিয়া জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্প আধিকারিক মিলন দেবঘড়িয়া বলনে, “রাজ্য থেকে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি। যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” (শেষ)