প্রতীকী ছবি।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নবদ্বীপ শহরচক্রের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হবে না। তাঁরা এর থেকে অব্যহতি পেলেন। তাঁরা তাঁদের পদমর্যাদা অনুযায়ী পোলিং অফিসার হিসাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।
সম্প্রতি নবদ্বীপ শহরের বিভিন্ন স্কুলের শতাধিক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বিধানসভা ভোটে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রাথমিক শিক্ষকদের পদ এবং বেতনক্রম অনুযায়ী ওই দায়িত্ব সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়ে তাঁরা দ্বারস্থ হন জেলা প্রশাসনের। তাঁরা লিখিতভাবে জানান, ‘বিধানসভা নির্বাচন–২০২১’-এ তাঁরা পোলিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরুর আগেই বিষয়টি নিস্পত্তি করতে শিক্ষক সংগঠনগুলি তৎপর হয়ে ওঠে। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। শেষপর্যন্ত নবদ্বীপ শহর চক্রের শিক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে ফার্স্ট পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নবদ্বীপ শহরচক্রের সভাপতি নিতাইচন্দ্র দাস বলেন, “শিক্ষকদের সকলের চিঠিতে প্রিসাইডিং অফিসার কেটে পোলিং অফিসার-১ লিখে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ।” একই কথা বলেন এবিটিএর নবদ্বীপ শাখার সম্পাদক তপন মণ্ডল।
অন্য দিকে, নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের দৃষ্টিহীন শিক্ষক মৃণালকান্তি সাহা ভোটকর্মী হিসাবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য চিঠি পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। ব্রেইল ছাড়া আর কোনও ভাবেই লিখতে বা পড়তে পারেন না নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির ছাত্র মৃণালকান্তিবাবু। ১৯৯০ সাল থেকে তিনি নবদ্বীপের দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ভোটের দায়িত্ব পেয়ে হতবাক মৃণালকান্তি বাবু বলেন, “ভোটের ডিউটির দায়িত্ব আমি কী ভাবে পালন করব বুঝতে পারছি না।” ইতিমধ্যে গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রশিক্ষণ নিতেও যেতে হয়েছিল দৃষ্টিহীন ওই শিক্ষককে।
এই প্রসঙ্গে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর নদিয়া জেলা সম্পাদক বাসুদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সাংগঠনিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি ওঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হবে।”