—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রবি মরসুমের শুরু থেকেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাসায়নিক সারের কৃত্রিম ভাবে সঙ্কট তৈরি করে সারের দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠছিল মুর্শিদাবাদের সার বিক্রেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে। সারের দাম বেশি নেওয়া রুখতে নির্ধারিত দামে সার বিক্রি ও বিক্রেতাকে ক্যাশমেমো দেওয়ার উপরে নজরদারি শুরু করে কৃষি দফতর। সম্প্রতি জেলা ও মহকুমা স্তরে টাস্ক ফোর্সও তৈরি করেছে প্রশাসন ও কৃষি দফতর। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে বিভিন্ন ডিলার ও সার বিক্রেতাদের দোকানে লাগাতার অভিযান চলছে। বেনিয়ম নজরে আসলে যথাযথ পদক্ষেপও করছে কৃষি দফতর। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এ বছর এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় সাড়ে তিনশো জন সার বিক্রেতাকে শো-কজ় করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন সার বিক্রেতাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সার বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নওদার বালি এলাকার এক সার বিক্রেতার লাইসেন্স অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষি দফতর ও প্রশাসনের লাগাতার অভিযান ও পদক্ষেপের কারণে অধিকাংশ জায়গায় সারের দাম বেশি নেওয়া বন্ধ হয়েছে। অন্যদিকে নওদার পাটিকাবাড়ি, বালি সহ একাধিক অঞ্চলে রবি মরসুমে কিছু অতি প্রয়োজনীয় সার বিক্রি বন্ধ রেখেছেন বেশ কিছু সার বিক্রেতা। নওদা কৃষক সংগ্রাম কমিটির কর্মকর্তা ইন্তাজ আলি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে ও নায্য দামে সার বিক্রির দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। প্রশাসনের নজরদারির কারণে বেশ কিছু জায়গায় বিক্রেতারা বেশ কিছু সার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। চাইব প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করবে।’’
সার বিক্রেতা মালিক সংগঠনের নওদা ব্লকের সভাপতি তাজ আলি মণ্ডল বলেন, ‘‘বেশ কিছু সার নির্ধারিত দামে বিক্রি সম্ভব নয়। ফলে অনেক সার বিক্রেতা সেই সমস্ত সার বিক্রি বন্ধ রেখেছেন।’’
জেলা কৃষি দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের দাবি জেলায় বিভিন্ন ধরনের সারের পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারের হিসেবে জেলায় ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে ৩১ হাজার মেট্রিকটন, ডিএপি মজুদ রয়েছে পাঁচ হাজার একশো মেট্রিকটন, মিউরেট অব পটাশ মজুত রয়েছে তিন হাজার ৭০ মেট্রিকটন, সিঙ্গেল সুপার ফসফেট মজুত রয়েছে দশ হাজার ছ'শো মেট্রিকটন, এনপিএ ও সালফার (কমপ্লেক্স) মজুত রয়েছে ১৫ হাজার ৬৯০ মেট্রিকটন।
জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মোহনলাল কুমার বলেন, ‘‘জেলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সার পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। দাম বেশি নেওয়া সহ অনিয়ম রুখতে আমরা তৎপর রয়েছি। টাস্ক ফোর্স নজরদারি চালাচ্ছে। অনেক সার বিক্রেতার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাশাপাশি চাষিদেরও সচেতন করা হচ্ছে পছন্দের নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তুতকারী সংস্থার সার ব্যবহার না করে মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রস্তুতকারী সংস্থার সার ব্যবহার করতে।’’ বিভিন্ন সারের দোকান থেকেও সেবিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।