খাল থেকে জল। নিজস্ব চিত্র
গ্রামে রয়েছে মাত্র দু’টি নলকূপ। দীর্ঘ দিন থেকেই সেই দু’টিই খারাপ। নেই কোনও পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। ফলে খাবার জল হোক কিংবা স্নান করার জল, সবকিছুতেই একমাত্র ভরসা বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ফিডার ক্যানেলের জল। এই ছবি মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা থানার মহাদেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বলিদাপুকুর গ্রামে।
দীর্ঘদিন ধরেই ফিডার ক্যানেলের জল পান করে চলেছেন গ্রামবাসীরা। বারবার পঞ্চায়েত প্রধান কে জানানোর পরেও কোনোরকম ব্যবস্থা হয়নি জলের। একপ্রকার বাধ্য হয়ে এবং জীবন বাঁচাতে ফিডার ক্যানেলের জলকেই ভরসা করেছেন মানুষ।
বলিদাপুকুর গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। একটি কুয়োও রয়েছে। এখন সেটিও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। তাই জলের চরম কষ্টের মধ্যে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
গ্রামের ফরিদা বিবি, সামিয়ারা খতুন, নৌসাদ শেখরা জানান, তাঁদের গ্রামে জলের অভাব অনেক দিনের। মাটির তলায় পাথর থাকায় নলকূপ বসাতে সমস্যা হয়, যদি নলকূপ বসানো যায়, তার খরচ অনেক, তাই কারও ব্যক্তিগত নলকূপ এখানে নেই। সরকারি দুটো নলকূপ রয়েছে, যা বেশির ভাগ সময় খারাপ থাকে। পানীয় জল হোক বা অন্য কাজের জন্য জলের প্রয়োজনে ফিডার ক্যানেলের জল তাঁদের ভরসা।
কিন্তু সে জল পরিশ্রুত তো নয়ই, বরং খাওয়া বিপজ্জনক বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। সেই জল খেয়ে গ্রামের বহু মানুষ পেটের অসুখে ভুগছেন। নৌসাদ শেখ বলেন, ‘‘কিন্তু কিছু করার নেই। পঞ্চায়েত প্রধানকে বারবার জাননো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। সে কারণে বেঁচে থাকার জন্য ফিডার ক্যানেলের জল খাচ্ছি।’’
মহাদেব নগর পঞ্চায়েতের প্রধান রেক্সনা খাতুন বলেন, ‘‘মহাদেবনগর পঞ্চায়েতের বলিদাপুকুর গ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান এমনই যে, এখানকার মাটির তলায় পাথর রয়েছে, সেই পাথর কেটে দুটি নলকূপ করা হয়েছে। ব্যয় বহুল এই নলকূপগুলি। তাই সেখানে পাইপের সাহায্যে পরিশুদ্ধ পানীয় জল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’