বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলায় দমকলকেন্দ্র যে কতটা অসহসায় তা প্রমানিত হল পাটের গুদামের আগুনের প্রেক্ষিতে।
মঙ্গলবার রাতে নবদ্বীপের ফাঁসিতলার পাট গুদাম আগুন ধরে। বৃহস্পতিবার বিকেলেও সেখান থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখা যায়। এখনও দমকলের দু’টি ইঞ্জিন দফায় দফায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে চলেছে। এমনিতেই জেলার বিভিন্ন দমকলকেন্দ্র পর্যাপ্ত কর্মী, আগুন নেভানোর যন্ত্র ও সরঞ্জামের অভাবে ধুঁকছে। তারমধ্যে নবদ্বীপ কেন্দ্রের হাল আরও করুণ। এলাকার লোকজনের দাবি, সময় মতো দমকল তৎপর হলে পাটের গুদামের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা যেত। নবদ্বীপ পাট ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদকের অন্যতম প্রদীপ সাহার অভিযোগ, “সেই রাতে দমকল কেন্দ্র আমাদের ফোন ধরেইনি।’’ গুদামের পাশেই বাড়ি সুদাম সাহার। সুদামবাবু জানান, গুদাম থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে রাত ৯টা নাগাদ দমকলে খবর দেওয়া হয়। আর দমকলের ইঞ্জিন এসে পৌঁছয় রাত ১০টা নাগাদ। অথচ ঘটনাস্থল থেকে দমকল কেন্দ্রের দূরত্ব মেরেকেটে এক কিলোমিটার। তার উপর কাজ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই জল ফুরিয়ে যায়। আরও আধঘণ্টা বাদে কৃষ্ণনগর থেকে দুটো ইঞ্জিন এলে তবে ঠিকঠাক আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। সুদামবাবুর কথায়, “প্রথম ইঞ্জিনটা যদি বড় হত এবং দ্রুত কাজ শুরু করত, তাহলে আগুন এতটা ছড়াত না।”
দমকলের নবদ্বীপ কেন্দ্রের ভরসা সবেধন নীলমণি একটি মাত্র ২০০০ লিটার জলধারন ক্ষমতা সম্পন্ন ছোট দমকল ইঞ্জিন। একটি ‘মেকানিক্যাল ফোম’ বহনকারী মোটরবাইক। ওই বাইক অবশ্য বড় আগুনের জন্য নয়। খুব ছোট আগুন তাৎক্ষণিক ভাবে নেভাতে ওই ফোম ব্যবহার করা হয়। একটি মাত্র ৩৫ ফুট উচ্চতার মই। অন্য দিকে পর্যাপ্ত অফিসার এবং কর্মী নেই। নেই আগুন মোকাবিলা করার জন্য অগ্নিরোধী পোশাক বা গ্যাস মুখোশ। অগ্নিরোধী পোশাকও এই কেন্দ্রে নেই।
নবদ্বীপের মতো জায়গায় দমকলের কেন একটিও বড় ইঞ্জিন নেই? উত্তরে নবদ্বীপ দমকল কেন্দ্রের ওসি শক্তিরঞ্জন দে বলেন, ‘‘শহরের রাস্তাগুলি সরু। তাই ছোট ইঞ্জিন রাখা হয়েছে।” কিন্তু শহরের সব রাস্তাই তো আর সঙ্কীর্ণ নয়, এই প্রশ্ন তুলছেন শহরের বাসিন্দা।