Earthquake

উত্তর থেকে ভূমিকম্পের দোল লাগল

তীব্রতা কম থাকায় কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। অনেকে আদৌ বুঝতেও পারেননি যে ভুমিকম্প হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০১:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

অল্পের উপর দিয়েই গেল। তবে মৃদু কাঁপুনি দিয়ে গেল।

Advertisement

বুধবার সাতসকালেই কেঁপে উঠল নদিয়ার কিছু এলাকা। সকাল ৮টা বাজতে তখন মোটে ৬ মিনিট বাকি। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতীয় সীমান্ত বরাবর বেশ কিছু অংশে মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়। মূলত জেলার উত্তর অংশ জুড়ে কয়েক সেকেন্ডের জন্য অনুভূত ওই মৃদু ভূকম্পনের রিখটার স্কেলে তীব্রতার মাত্রা ছিল ৪.১।

‘ন্যাশনাল সেন্টার অফ সিসমলজি’র তথ্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের উৎকেন্দ্র ছিল নদিয়ার উত্তর সীমানা পার করে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থেকে ১৮.২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সর্বাঙ্গপুরে। ওই স্থানটিকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে নদিয়ার নবদ্বীপ এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কিছু অংশেও ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে জানাচ্ছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। যদিও তীব্রতা কম থাকায় কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। অনেকে আদৌ বুঝতেও পারেননি যে ভুমিকম্প হয়েছে।

Advertisement

মাটি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়া এই ভূমিকম্পের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভূবিজ্ঞানের সন্ধানী ছাত্র জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী কিছু ভূ-গাঠনিক কারণকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর ব্যাখ্যা, এই অঞ্চলটি ‘ইওসিন’ সময়কালে অর্থাৎ আনুমানিক প্রায় ৫০ কোটি বছর আগে সৃষ্ট। ভূ-বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই অঞ্চল মহীসোপান এলাকার উপরে অবস্থিত বঙ্গ অববাহিকার অংশ। মূলত গঙ্গাবাহিত পলিরাশির সঞ্চয়ের মাধ্যমে ওই সময় ধরে গঠিত হয়েছে এই এলাকা। বিভিন্ন ভূ-বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, ওই স্থানটি উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পূর্বমুখী একটি ‘লিনিয়ামেন্টের’ উপরে অবস্থিত। অর্থাৎ বেশ কয়েকটি চ্যুতি বা ফল্টের উপরে অবস্থান করছে এলাকাটি। কোনও কারণে সেই চ্যুতিগুলির অবস্থানে একটু পরিবর্তন হলেই এমন ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের সমীক্ষা অনুযায়ী, সমগ্র ওই অঞ্চলটি রিখটার স্কেলে ৫-এর কম তীব্রতা বিশিষ্ট ভূকম্পন এলাকার অন্তর্ভুক্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের ছাত্র জ্যোতির্ময় জানান, এই অঞ্চলটির পূর্ব দিকে আরও একটি লিনিয়ামেন্ট-সহ দক্ষিণ-পূর্বে ‘দেবগ্রাম-বগ্রা চ্যুতি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে ‘রাজমহল চ্যুতি’র মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় ভূ-গঠনিক দিক থেকে স্বাভাবিক ভাবেই মৃদু ভূকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই পলিগঠিত ওই অঞ্চলটিতে জমে থাকা পলিরাশির চাপে ভূ-অভ্যন্তরে চ্যুতি বরাবর সরণ ঘটার কারনে আগামী দিনেও এমন কম থেকে মাঝারি তীব্রতার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement