থেমে থাক-২

৩৮ কিমি পেরোতে ৫ ঘণ্টা

রাস্তা মোটে ৩৮ কিলোমিটার। কিন্তু সেই পথটুকু পেরোতে সময় লাগছে ৫ ঘণ্টা! ফরাক্কা-মালদহ যাতায়াতকারীরা কয়েক হাজার যাত্রী এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে রইলেন সোমবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৬ ০০:২৫
Share:

রাস্তা মোটে ৩৮ কিলোমিটার। কিন্তু সেই পথটুকু পেরোতে সময় লাগছে ৫ ঘণ্টা!

Advertisement

ফরাক্কা-মালদহ যাতায়াতকারীরা কয়েক হাজার যাত্রী এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে রইলেন সোমবার। সৌজন্যে যানজট। তার ঠেলায় দিনভর তো তাঁদের নাকাল হতেই হল, এমনকী সন্ধ্যায়ও বৈষ্ণবনগরের ১৬ মাইল থেকে কালিয়াচক চৌরঙ্গী হয়ে সুজাপুর পর্যন্ত রাস্তায় অনেকটা সময় জুড়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল সার বেঁধে। গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থা বিশেষ বদলায়নি।

বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কর্তারা মালদহে এসে এমনই জটে ফেঁসে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের চোখ রাঙানিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। নিত্য দিনের এই যানজটে ভুক্তভোগী কালিয়াচকের বাসিন্দারা এই উদাহরণ টেনে বলছেন, ইচ্ছে করলেই তা হলে পুলিশ রাস্তায় যান চলাচল সহজ করতে পারে। তা হলে এখন এ ভাবে জট হচ্ছে কেন? তাঁদের মন্তব্য, আসলে এখন ভোট নেই, কমিশন নেই। তাই যানজট মেটাতে পুলিশ-প্রশাসনের বিশেষ হেলদোলও নেই।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে অবশ্য অন্য কথা বলা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এ দিন মূল যানজট হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার বল্লারপুরে। ফরাক্কার আগের এই অংশে দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহন ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল। তার জের ছড়িয়ে পড়ে উত্তরে। দফায় দফায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্য একটি সূত্র কিন্তু বলছে, এর ফলে মালদহের একটি অংশে জট বাড়তে পারে। কিন্তু মালদহ থেকে যে রাস্তা বালুরঘাটে গিয়েছে, সেখানে জট হবে কেন? পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, কালিয়াচকে চার লেনের রাস্তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। সেই কাজের জন্য রাস্তার পাশে গর্ত রয়েছে। ফলে ওই এলাকায় সিঙ্গল লেন করে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। তাতেই এত সমস্যা।

পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘যানজট পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে আগামী ২০ তারিখ জেলাশাসকের উদ্যোগে ইংরেজবাজার টাউন হলে একটি আলোচনাসভা ডাকা হয়েছে। আশা করছি একটা সমাধানসূত্র মিলবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে দ্রুত চার লেনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।’’ জাতীয় সড়ক মালদহ ডিভিশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার দীনেশকুমার হানসারিয়া বলেন, ‘‘চার লেনের কাজ বৃষ্টির জন্য কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।’’

কালিয়াচকের যানজটের সমস্যা নতুন নয়। তবে এখানে চার লেনের কাজ শুরুর পর থেকে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকছে। এ দিনও সকাল থেকে ফরাক্কার দিক থেকে গাড়ির লাইন লাগে। ধীরে ধীরে তা কালিয়াচক চৌরঙ্গী হয়ে জালালপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। বিকেলের দিকে সেই যানজটের রেশ গিয়ে পৌঁছয় সুজাপুর পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ মালদহের ব্যবসায়ী মহলও। মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘লাগাতার যানজট চলায় প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement