—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের চার বিধায়কের গলায় বিদ্রোহের সুর শোনা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর ছেলে জামিল আলম চৌধুরী এ বার বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের ছেলে গোলাম নবী আজাদ বেলডাঙা ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। নওদার তৃণমূল বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খানের মেয়ে নাজনিন খান নওদা পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। জলঙ্গির তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাকের দাবি, ‘‘আমার আত্মীয়, নিকট আত্মীয়, অনুগামী কাউকেই টিকিট দেওয়া হয়নি।’’
প্রশ্ন উঠেছে, সন্তানেরাই দলের প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন, তার পরেও কেন এই বিধায়কেরা দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন?
সাহিনা মমতাজ খান অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথম তালিকায় প্রার্থী হিসেবে আমার মেয়ের নাম ছিল। পরের তালিকায় তাঁর নাম নেই। তা ছাড়া, শুধু আমার মেয়ের নাম নেই বলে ক্ষোভের কথা জানিয়েছি, এটা ঠিক নয়। আমার দেওয়া কোনও নামই প্রার্থী হিসেবে তালিকায় জায়গা পায়নি। তাই প্রতিবাদ জানিয়েছি। তবে আমার মেয়ে নওদা পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসন থেকে মনোনয়নজমা দিয়েছে।’’
শনিবার বিকেলে রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আমার ছেলে বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী হিসেবে দলের টিকিট পেয়েছে। সেই মতো সে মনোনয়নও করেছে।’’ তার পরেও দলের সঙ্গে বিরোধ কেন? রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘বেলডাঙা ১ ব্লকের যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত আমার বিধানসভা এলাকায় পড়ে তাতে কোনও সমস্যা নেই। সেখানে দল বসে প্রার্থী ঠিক করেছে। সেখানে আমার ছেলেও প্রার্থী হয়েছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে বেলডাঙা ২ ব্লক নিয়ে। সে কথা আমি বলেছি। সেই সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি।’’
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আমার বাড়ি রেজিনগর বিধানসভা এলাকায়। ছেলেকে সেখানে দল টিকিট দিয়েছে। ছেলে টিকিট চেয়ে আবেদনও করেনি। ছেলের যোগ্যতায় দল থেকে টিকিট পেয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে আমরা বিধানসভা কেন্দ্র ভরতপুরে।’’
হুমায়ুনের দাবি, ‘‘দু’জন ব্লক সভাপতি এবং ৭ জন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরোধিতা সত্ত্বেও ৪৩ হাজারেরও বেশি ভোটে আমি জয়ী হয়েছি। সেখানে ১০ মাস আগে আসা দুই ব্লক সভাপতি পঞ্চায়েতের টিকিটের ক্ষেত্রে আমার অনুগামীদের গুরুত্ব দেবে না এটা হতে পারে না। এখনও সময় হাতে রয়েছে। ব্লক সভাপতিরা বসে টিকিটের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ভিত্তিতে প্রার্থী মেনে নিলে নিশ্চয় সমস্যা মিটবে। এখনও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং দলের প্রতীক দেওয়ার জন্য হাতে সময় রয়েছে।’’ ওই আবহে শনিবার বিকেল থেকে বহরমপুরে দলের জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায় সহ অন্য নেতাদের উপস্থিতিতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতীক বিলি হয়। সেখানে কোনও বিক্ষোভ চোখে পড়েনি।
শনিবার বিকেলে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের যাতে ভাল প্রার্থী হয় তা দেখেই দলের তরফে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সেই মতো প্রতীক বিলি হচ্ছে।’’ তবে বিধায়কদের ক্ষোভ বা তাঁদের ছেলেমেয়েদের দলের টিকিট দেওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি শাওনি।